বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাদা পোশাকে অভিযানে র‍্যাবের প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল?

  •    
  • ২৬ মে, ২০২২ ২১:৩০

ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, দল বেঁধে মারা হয়েছে সাদা পোশাকের দুই র‍্যাব সদস্য ও তাদের এক সোর্সকে। তারা আহত হওয়ার প্রায় ৩০ মিনিট পর আসে র‍্যাবের অতিরিক্ত ফোর্স। এর আগেই খবর শুনে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। 

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট বাজারে সাদা পোশাকে অভিযানে যাওয়া র‌্যাব সদস্যদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয়দের ওই ‍হামলায় আহত দুই র‍্যাব সদস্য ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।

অভিযানে গিয়ে র‌্যাবের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা চট্টগ্রামে এটিই প্রথম নয়। তবে বারইয়ারহাটে যেভাবে তাদের মারধর করা হয়েছে, তা নির্মম। আত্মরক্ষায় সেই দুই র‌্যাব সদস্য কোনো প্রতিরোধই করতে পারেননি।

নিউজবাংলার কাছে আসা ঘটনার কয়েকটি ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, দল বেঁধে মারা হয়েছে সাদা পোশাকের দুই র‌্যাব সদস্য ও তাদের এক সোর্সকে। তারা আহত হওয়ার প্রায় ৩০ মিনিট পর আসে র‌্যাবের অতিরিক্ত ফোর্স। এর আগেই খবর শুনে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ।

রাজীব মজুমদার নামে এক সাংবাদিক নিউজবাংলাকে জানান, বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিড়ে দুই র‌্যাব সদস্যকে উদ্ধারে বেগ পেতে হয় পুলিশ ও র‌্যাবের অতিরিক্ত ফোর্সকে।

র‌্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বৃহস্পতিবার দুপুরে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার ৫-৭ মিনিটের মধ্যেই র‌্যাবের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহকালে কৌশলগত কারণে এই টিমটি পেছনে ছিল।’

দুই সদস্য আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই র‌্যাব যে দ্রুত প্রতিরোধ্মূলক ব্যবস্থা নিতে পারেনি, তার প্রমাণ আঘাতের চিহ্ন। অভিযানে প্রস্তুতির ঘাটতির দিকটিও ফুটে উঠেছে।

জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুর হোসেন মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে থানা খুব কাছে। মাগরিবের নামাজের সময় এ ঘটনা ঘটে। আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনা সম্প্রতি বেড়ে গেছে। বিশেষত রপ্তানি পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যান থাকে ডাকাতদের টার্গেটে। সীতাকুন্ড ও মিরসরাই এলাকায় গাড়ি থামিয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বুধবারের বিষয়টিতে স্থানীয়রা ডাকাত সন্দেহে এগিয়ে আসেন। র‍্যাব সদস্যেদের ডাকাত ভেবেই তারা মারধর করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে বিপুল দাস নামে স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, ‘সাদা পোশাকে র‌্যাবের সদস্যরা ছিলেন সাদা রঙের একটি প্রাইভেট কারে। হঠাৎ করে একটি কাভার্ড ভ্যান প্রাইভেট কারের সামনে গেলে গাড়ি থেকে উপরের দিকে গুলি ছোড়া হয়।

‘এ সময় ডাকাত সন্দেহে স্থানীয়রা গাড়িতে হামলা চালায়। দূর থেকে অনেকে ইটপাটকেলও ছুড়ে মারে প্রাইভেট কারে। হামলাকারীরা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করায় অল্প সময়ে অনেক মানুষ জড়ো হয়ে যায়।’

র‌্যাব-৭-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আফছার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন তাদের দুই সদস্য।

আবার ঘটনার পর বুধবার রাতে র‌্যাব-৭-এর লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ নিউজবাংলাকে জানান, চিহ্নিত দুই মাদক কারবারিকে ধরতে অভিযানের পরিকল্পনা ছিল। র‌্যাবের এই অভিযানের তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। মাদক কারবারিরা জানত যে র‌্যাব সদস্যরা ‘রেকি’ করতে আসবেন।

প্রশ্ন উঠেছে, অভিযান কিংবা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে সাদা পোশাকে র‌্যাব যেতে পারে কি না।

২০১৬ সালের ২৪ মে উচ্চ আদালতের এক রায়ে বলা হয়, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাউকে আটক করতে পারবে না। আটক বা গ্রেপ্তার করতে হলে পরিচয় দিয়ে নিতে হবে।

সেটি অনুসরণ করা হয়েছে বলে দাবি করে র‌্যাব-৭-এর অধিনায়ক বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) আমাদের দুই সদস্য গোয়েন্দা তথ্যের জন্য সাদা পোশাকে গিয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে পরিচয়পত্র ছিল। আদালতের নির্দেশনা মেনেই আমরা ইউনিফর্ম পরেই অভিযান পরিচালনা করি। তবে তথ্য সংগ্রহের জন্য সাদা পোশাকে যাওয়া যাবে না– এমন বিষয় আমার জানা নেই। আমি যতটুকু বুঝি, ইউনিফর্ম পরে তো তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব নয়।’

নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আইনজীবী আখতার কবীর চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ছদ্মবেশে নানা অপকর্মের খবর বিভিন্ন সময় পাওয়া গেছে বলেই ২০১৬ সালে উচ্চ আদালত এ নির্দেশনা দেয়। আর গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে এলিট ফোর্স হিসেবে র‌্যাব কেন যাবে?

‘দেশে পাঁচ-ছয়টা গোয়েন্দা সংস্থা আছে। এটা গোয়েন্দা তথ্যের কোনো বিষয় নয়। এই অচলায়তন থেকে তাদের বের হয়ে আসা উচিত।’

এ বিভাগের আরো খবর