দেশের পর্যটনকে সমৃদ্ধ করতে জনসাধারণকে আরও উদার হতে পরামর্শ দিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। বলেছেন, পর্যটনের জন্য আরবের রক্ষণশীল দেশগুলো নিজেদের খোলনলচে পাল্টে ফেলছে। বাংলাদেশের এমন কিছু করা লাগবে না, কেবল মনোভাবের একটু পরিবর্তন আনলেই চলবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পর্যটন মাস্টার প্ল্যান বিষয়ে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। তবে এই উদার হওয়া বলতে কী বোঝায়, সেই বিস্তারিত ব্যাখ্যা তিনি দেননি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আজ সৌদি আরবের মতো একটি রক্ষণশীল দেশ তারাও এটা চিন্তা করছে যে, একটি বেসিক পরিবর্তন করা দরকার। মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই, পর্যটকদের আকর্ষণ করতে সেখানে তাদের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসেছে।
‘আমাদের যে সংস্কৃতি, সেটা পর্যটনবান্ধব। আমাদের কোনো কিছু থেকে বের হয়ে আসতে হবে না। তবে আমাদের আরও উদার হতে হবে। আমাদের দেশে পর্যটকদের ধারণ করতে যে যে উপাদান দরকার, তার সব আছে। আমি বিশ্বাস করি, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত আমাদের যে মূল্যবোধগুলো, এগুলো যদি আমরা ধারণ করি সেখানেই পর্যটনকে প্রমোট করার সবকিছু আছে।’
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষণ করার মতো যথেষ্ট বলেও মনে করেন প্রতিমন্ত্রী। বলেন, ‘আমাদের দেশ অনেক সুন্দর, অনেক নান্দনিক। এই বিষয়গুলোকে ধারণ করতে পারলে পর্যটন এগিয়ে যাবে। এই বিষয়গুলো মানুষকে জানান দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। প্রচার নিয়ে আমরা আগে চিন্তা করিনি, এখন চিন্তা করছি।’
পর্যটনের মহাপরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মাস্টার প্ল্যানের মূল বিষয় হবে- যে জায়গার সঙ্গে যে পরিবেশের সঙ্গে যেটা সামঞ্জস্যপূর্ণ, সেটা করা হবে। যেমন বরিশালে রিভারাইন ট্যুরিজম, পাহাড়ের ইকোসিস্টেম মেইনটেইন করে ট্যুরিজমের ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে।’
কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন, সেখানে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পদ্মা সেতু, এগুলো পর্যটনকে প্রমোট করার চিন্তা মাথায় নিয়েই করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘আগামীতেও বড় প্রকল্প নেয়া হবে।’
চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই এই পর্যটন নিয়ে মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে বলে আশা করেন পর্যটন সচিব মোকাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ পর্যটনে যে অবস্থায় রয়েছে, এটিকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এতদিন পর্যন্ত আমরা যতগুলো কার্যক্রম করেছি, ঠিক কো-অর্ডিনেটেড ওয়েতে (সমন্বিতভাবে) করা হয়নি।’
সরকার ১ হাজার ১০০টি পর্যটন স্থান চিহ্নিত করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলোর ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এগুলোকে সমন্বিতভাবে উন্নয়নের উদ্যোগ আমরা এখন পর্যন্ত নিতে পারিনি। আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, আমাদের ফান্ড বা বাজেটের ঘাটতি রয়েছে, আমাদের সক্ষমতার অভাব রয়েছে, আমাদের বিভিন্ন কারিগরি সহায়তা সেগুলোর অভাব রয়েছে।’