চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ডাকাত আখ্যা দিয়ে সাদা পোশাকে থাকা র্যাব সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে তিন জন আহত হয়েছেন।
উপজেলার বারৈয়ারহাট পৌরসভা এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন শামীম কাউসার, মোখলেসুর রহমান ও মো. পারভেজ। এর মধ্যে পারভেজ র্যাব সদস্য নন, তিনি র্যাবের সোর্স বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
র্যাব-৭ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আহতদের প্রথমে বারইয়ারহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে। গুরুতর আহত দুইজনকে রাতে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে হেলিকপ্টারে।
হামলার বিষয়ে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমএ ইউসুফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুইজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে আমাদের অভিযানের পরিকল্পনা ছিল। র্যাবের এই অভিযানের তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। মাদক ব্যবসায়ীরা জানতো যে র্যাব সদস্যরা রেকি করতে আসবে।
‘তারা আগে থেকেই হামলার পরিকল্পনা করে রেখেছিল, কারন শুধু জনগন পেটালে খালি হাতেই মারতো। তাদের মাঝখান থেকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেছি।’
দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা।
রাত নয়টায় জোরারগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাইরুল আলম বলেন, ‘মাগরিবের পরপরই তাদের উপর হামলার ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসছেন। এখনই বিস্তারিত জানানো যাচ্ছে না।’
আহত দুই র্যাব সদস্যকে হেলিকপ্টারে করে ফেনী থেকে ঢাকায় নেয়া হয়। ছবি: নিউজবাংলাকে বা কারা এই হামলা চালিয়েছে- তা জানাতে পারেনি কেউ। তবে নিউজবাংলার হাতে আসা ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে একদল লোক তাদের মারধর করছে।
স্থানীয় সাংবাদিক রাজিব মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটি প্রাইভেট কারকে ফলো করে বারৈয়ারহাট পৌরসভায় আটক করে র্যাব সদস্যরা। তখন ডাকাত বলে চেঁচামেচি করে লোকজন ডেকে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।’
স্থানীয় আরেক সাংবাদিক মো. শফিক জানান, জোরারগঞ্জ বাজারের একটি গাড়িকে আটকাতে ওই র্যাব সদস্যরা চেকপোস্ট বসানোর চেষ্টা করে। তখন গাড়িতে থাকা লোকজন নেমে মসজিদের গলির দিকে ঢুকে যায়। তাদের ধাওয়া করে ওই র্যাব সদস্যরা। সে সময় গলির স্থানীয় দোকানদাররা ডাকাত বলে চিৎকার করে লোকজন জড়ো করতে থাকে। স্থানীয়রা তাদের আটকে পিটুনি দেয়।
র্যাব-৭ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় শামিম কাউসার ও মোখলেসুর রহমানকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নেয়া হয়েছে।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মো. পারভেজ। হামলায় র্যাব সদস্যদের সঙ্গে তিনিও আহত হন। ছবি: নিউজবাংলাফেনী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, আহতদের মধ্যে শামীম সৈনিক ও মোখলেস সিপাহী বলে তাকে জানানো হয়েছে। আর আহত পারভেজ র্যাবের সোর্স বলে তিনি জেনেছেন।
তিনি আরও জানান, আহতদের হাসপাতালে নেয়ার পর র্যাবের কর্মকর্তারা এসে হেলিকপ্টারে করে দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার ব্যবস্থা করেন। তাদের নিতে রাত সাড়ে ৯টার দিকে হেলিকপ্টার আসে ফেনীর ভাষা শহীদ সালাম স্টেডিয়ামে।
পারভেজ ফেনী জেনারেল হাসপাতালেই আছেন বলে জানান চিকিৎসক শহিদুল।