ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমকে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করে কারচুপি করা অসম্ভব বলে নিজের মূল্যায়নের কথা জানিয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
ইভিএম মেনে নিলে এর বিরোধীদেরই লাভ হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বলেছেন, তার এই মূল্যায়ন কেউ বিশ্বাস করবে কি না সেটা রাজনৈতিক ব্যাপার।
বুধবার রাজধানীর আগারগাওঁয়ে নির্বাচন ভবনে ইভিএম বিষয়ে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ইভিএম অপারেট শুরুর আগে ভেতরে কী আছে দেখে নেয়া সম্ভব জানিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি খবরের কাগজে দেখেছি রাজনৈতিক দলগুলি নতুন করে কমিশন তৈরিসহ নানা দাবি করছে। আমি রাজনৈতিক দলগুলোকে বলব, আপনাদের মত অনুযায়ী যদি নতুন কমিশন তৈরি করতে পারেন, তারপরও তাদেরকে অনুরোধ করব. আপনারা এই নতুন মেশিনটা ব্যবহার করেন, তাতে আপনাদেরই লাভ হবে।’
২০০৯ সালের পর থেকেই বাংলাদেশে ভোট গ্রহণে ইভিএম চালু করার চেষ্টা চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই যন্ত্র নিয়ে বেশ আগ্রহী হলেও রাজনীতিতে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও সমমনারা এই যন্ত্রের বিরোধিতা করছে। তাদের অভিযোগ, এই যন্ত্র দিয়ে দূর থেকে ভোট নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
তবে নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ১০০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা চলছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন কমিশনার মো. আলমগীর।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য দলীয় একটি নিজস্ব আলোচনায় বলেছেন, আগামী নির্বাচনে তিন শ আসনেই ইভিএমে ভোট হবে। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল মঙ্গলবারও বলেছেন, ভোট কীভাবে হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনও নেননি তারা।
ইভিএম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ধারাবাহিকভাবে আরও বৈঠক করা হবে বলেও সেদিন জানান সিইসি, যার অংশ হিসেবে এই আলোচনা হয়। ইভিএম পরীক্ষায় বিশেষজ্ঞদের ডাকার কথাও জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, খুলে দেখান সার্কিটগুলো। ভেতরে আইসিগুলো যেভাবে বসানো আছে, সেখানে ভেতরে ঢুকে ম্যানুপুলেট করা ভার্চুয়ালি অসম্ভব।’
জাফর ইকবাল বলেন, ‘কেউ বিশ্বাস করবে কি না সেটা তার ব্যাপার, সেটা রাজনৈতিক ব্যাপার। আমি টেকনিক্যাল জিনিসটা বলছি। টেকনিক্যাল পয়েন্ট থেকে এর ভেতরে ম্যানুপুলেট করার সম্ভাবনা নেই।
‘যারা ইভিএমের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাদেরকে অনুরোধ করব, তারা যেন সমস্যাগুলো সুনির্দিষ্টভাবে লিখে আমাদেরকে জানান। আমরা তাদেরকে ইভিএম সম্পর্কে ডিটেইলস জানাতে বা দেখাতে রাজি আছি।’
এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের আন্ডার গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ইভিএম তৈরি করে। ইভিএম তৈরি করে তারা বিদেশ থেকে বিভিন্ন পুরস্কার নিয়ে এসেছে। ইভিএম মেশিন নিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে কনভিন্সড হয়েছি। অত্যান্ত চমৎকার একটি মেশিন।’