ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার শিবগঞ্জ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সদর উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র ব্যস্ততম সড়কটির এমন দশায় ভোগান্তি কাঁধে নিয়েই চলাচল করছেন প্রায় অর্ধলাখ মানুষ। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন পথচারীসহ এ সড়কে চলাচল করা যাত্রীরা।
বেহাল সড়কটিতে দেখা যায়, ফুলবাড়িয়া থেকে শিবগঞ্জের ৯ কিলোমিটার এ সড়কটির অন্তত দুই কিলোমিটারজুড়ে ভাঙাচোরা। সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে একাকার। সড়কের পিচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভেসে উঠেছে ইট-সুরকি। ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে খানাখন্দের এ সড়ক দিয়ে।
স্থানীয়রা জানান, সড়কের দুই পাশে কিছু ফিশারি তৈরি করা হয়েছে। এসব ফিশারিতে দিনের বেশির ভাগ সময় মোটর দিয়ে পানি দেয়া হয়। মাঝেমধ্যে ফিশারির কিনারা ভেঙে সড়কে পানি চলে আসে। এতে সড়কটি দিন দিন আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় পানি সহজে নামতেও পারে না। তাই জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি তাদের।
উপজেলার ২ নম্বর পুটিদানা ইউনিয়নের আহম্মেদ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ইউনিয়নের পানজানা গ্রামের তালতলী পশ্চিম বাজারের কাছে সবচেয়ে বেশি খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এ পর্যন্ত আসলে মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছে। মাঝেমধ্যে গর্তে পড়ে অনেকে আহত হন। তবুও সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।’
এমন সড়কে চলতে গিয়ে অতিষ্ঠ বয়োবৃদ্ধ জালাল উদ্দীন। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাগো দুর্ভোগের কথা কেউ চিন্তা করে না। ভোটের আগে নেতাফেতার অভাব থাহে না। এহন নেতাগরে খুঁইজ্যা পাইনা। আগামী দিনে বুইঝা-হুইনা ভালা লোকরে ভোট দিয়াম।’
সড়কটি দিয়ে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় কথা হয় সিএনজিচালিত অটোচালক ফরহাদ মিয়ার সঙ্গে। বলেন, ‘সড়কটি মেরামত না করায় খানাখন্দের মধ্যে চাকা পড়ে ফেঁসে যায়। মাঝেমধ্যে নাট-বল্টু ক্ষয়ে পড়ে, নষ্ট হয় গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। এতে যানবাহনের চালকরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
তার ভাষ্য, এই সড়কটি উপজেলা শহরের সঙ্গে মিশেছে। ফলে বাধ্য হয়ে চলাচল করতে হয়। কিন্তু খানাখন্দের কারণে যাত্রী নিয়ে যথাসময়ে পৌঁছানো সম্ভব হয় না।
অটোরিকশাচালক আসাদুল হক বলেন, ‘আগে প্রতিদিন ১ হাজার ৩০০ ট্যাহা ভাড়া মারবার পারতাম। সড়ক ভাঙাচোরার কারণে এহন ৮০০ ট্যাহা ভাড়া মারবার পারি। গাড়ির মহাজনরে ৫০০ ট্যাহা দেয়ার পর ৩০০ ট্যাহা হাতে থাহে। সড়কটা ভালা করা দরকার। ঠিকমতো সংসার চালাবার পারতাছি না।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোরশেদ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সড়কটির দুই পাশে ফিশারি থাকার কারণে মাঝেমধ্যে সড়কের পাশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ জন্য ফিশারির মালিকদের সতর্ক করা হয়েছে। এ ছাড়া খানাখন্দের স্থানগুলো দ্রুত মেরামত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করা হবে।’