নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ‘কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো’ আমে সয়লাব হয়ে গেছে মেহেরপুরের আমের বাজার। এই আম স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
জেলা প্রশাসন বলছে, নির্দিষ্ট সময়ের আগে আম পেড়ে কেমিক্যাল দিয়ে পাকিয়ে বাজারজাত করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।জেলায় এ বছর দুই হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ২৫ মে থেকে গাছ থেকে আম পাড়ার কথা। অথচ তার সপ্তাহখানেক আগে বাজারে পাকা আম পাওয়া যাচ্ছে।
সরজমিনে মেহেরপুরের বাজারে দেখা গেছে, মেহেরপুর জেলার তিনটি উপজেলার হাট, বাজার, বাসস্ট্যান্ড, সড়কের পাশে অবস্থিত প্রায় দেড় শতাধিক ফলের দোকানে সাজানো আছে পাকা আম। যার মধ্যে কিছু দোকানের আম অন্য দেশ থেকে আমদানি করা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাগান মালিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমের মুকুল যখন আসে তখন আমি একটি বাগান দেড় লাখ টাকায় কিনেছি। এ বছর প্রচণ্ড তাপদাহ ও ঝড় বৃষ্টিতে আমের গুটি ঝরে উৎপাদন বেশি হবে না।
‘আমার এ বাগান থেকে আম বেচে আসল টাকা ফেরত পাব না। তাই দুটো পয়সার আসায় আজ সপ্তাহ খানেক ধরে বাধ্য হয়ে কেমিক্যাল দিয়ে আম পাকাচ্ছি। বতর্মানে প্রতি কেজি আম বিক্রি করছি ৭০ টাকা দরে।’
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ফজলুর রহমান বলেন, ‘কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো আম স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর। এ সব আম খেলে মানুষের লিভার, কিডনির সমস্যা ছাড়াও ক্যান্সারের মতো মারণব্যাধি হতে পারে।’
মেহেরপুর কৃষি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক সামসুল আলম নিউজবাংলাকে জানান, নির্দিষ্ট সময়ের আগে অপরিপক্ক আম কেও যদি কারবাইড, এথোলিন বা কেমিক্যাল দিয়ে পাকায় তবে সে আমগুলো তেমন একটা পাকবে না। তা ছাড়া সুমিষ্ট হবে না। তাই এমন কাজ কেও যদি করে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো আম ব্যবসায়ী বা বাগান মালিক যদি অপরিপক্ক আম কেমিক্যাল দিয়ে বাজারজাত করেন যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’