শরীয়তপুরের জাজিরায় গরু চোর শনাক্ত করতে এক কবিরাজের কাছ থেকে রুটি-পড়া এনেছিলেন শওকত বেপারী নামে এক ব্যবসায়ী। পরে সেই রুটি খেয়ে ৫৫ বছর বয়সী শওকত নিজেই মারা গেছেন। এ ছাড়া ওই রুটি খেয়ে মান্নান হাওলাদার নামে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধও মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
নিহত শওকত জাজিরার নাওডোবা ইউনিয়নের কালু বেপারী কান্দি গ্রামের মৃত ওহাব বেপারীর ছেলে।
মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। জাজিরা থানার ওসি মিন্টু মণ্ডল নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের ভাই লিয়াকত বেপারী জানান, শওকত বেপারী পেশায় গরু ব্যাবসায়ী ছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে তার গোয়ালঘর থেকে গরু চুরি হয়। চুরি যাওয়া গরু উদ্ধারে স্থানীয় আবু বেপারীর পরামর্শে ফরিদপুরের এক কবিরাজের কাছে যান তিনি।
এ সময় ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে গরু চোর শনাক্ত করতে শওকতকে রুটি ও আয়না-পড়া দেন সেই কবিরাজ। চোর ধরা না পরলে টাকা ফেরত দেয়ারও নিশ্চয়তা দেন তিনি।
শনিবার বিকেলে রুটি ও আয়না-পড়া নিয়ে বাড়িতে আসেন শওকত। রোববার কবিরাজের আয়নায় চোর দেখা না গেলে সন্দেহভাজনদের রুটি-পড়া খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে অন্যদের খাওয়ানোর আগে নিজেও সেই রুটি খান শওকত। এতেই ঘটে বিপত্তি! গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ সময় আরেকটি রুটি খেয়ে মান্নান হওলাদার নামে আরও এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে যান। অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে দুজনকেই দ্রুত ঢাকা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় স্বজনরা। ঢাকায় নেয়ার পথেই মারা যান শওকত। আর মান্নান হাওলাদার বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
নিহতের ছেলে রাজিব হোসেন বলেন, ‘ওই কবিরাজের নাম ইসরাফিল। তার বাড়ি ফরিদপুর। কয়েকটি রুটি সে পড়ে দিয়েছিল। এর মধ্যে আমার বাবার জন্য একটি রুটি আলাদা করে দিয়েছিল। সেই রুটি খেয়েই আমার বাবার মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে ওই কবিরাজের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।’
জাজিরা থানার ওসি মিন্টু মণ্ডল জানান, খবরটি জানার পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে এখনও লিখিত অভিযোগ দেয়নি কেউ।
ওসি বলেন, ‘ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিহত শওকত বেপারীর মরদেহ দাফন করতে চেয়েছিল তার পরিবার। কিন্তু বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় আমরা ময়নাতদন্ত করিয়েছি। প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে জানা যাবে।’