ফজলি আম নিয়ে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের লড়াই আপতত শেষ। সুস্বাদু এই আমের জিআই সনদ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই স্নায়ুযুদ্ধ চলেছে জেলা দুটির মধ্যে।
মঙ্গলবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত দীর্ঘ শুনানি শেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে- ফজলি আম শুধু রাজশাহীর একার নয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জেরও এর ওপর অধিকার রয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমের এই জাতটিকে এখন থেকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি হিসেবেই পরিচিত হবে।
তবে কীসের ভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি রোববার প্রকাশ করবে সংস্থাটি।
এর আগে গত বছরের অক্টোবরে ফজলি আমকে রাজশাহীর ফজলি নামে জিআই সনদ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর। পরে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আপত্তিপত্র জমা দেয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশন। সেই আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতেই অনুষ্ঠিত হয়েছে শুনানি।
এদিকে একটি পণ্যের জিআই সনদ দুই এলাকাকে দেয়ার বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফল বিজ্ঞানী। তার মতে, জিআই সনদের মূল বিষয়টা হলো ভৌগোলিক নির্দেশক। অর্থাৎ পণ্যটির উৎপত্তির স্থান বা শেকড় কোথায় তা বের করেই জিআই সনদ দেয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘একই পণ্য দুই জায়গার হয় কেমন করে?’
শুনানিতে অংশ নেয়া ফল গবেষণা কেন্দ্র রাজশাহীর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন বলেন, ‘কীসের ভিত্তিতে এ রায় দেয়া হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ আমরা রোববার পাব।’
নতুন সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে নতুন করে জার্নাল প্রকাশ পাবে। তখন এটি নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে জানাতে পারবেন। আগে যেমন চাঁপাইনবাবগঞ্জ আপত্তি জানিয়েছিল। আমরাও এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেব।’
এর আগে রাজশাহীর নামে ফজলি আমের জিআই সনদ দেয়া নিয়ে আপত্তি জানানো চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নতুন সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলেন, সবার সঙ্গে কথা বলে বুধবার আমাদের সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তিনি বলেন, ‘সবাইকে নিয়েই আমরা রাজশাহীর নামে ফজলির জিআই সনদ দেয়ার বিরোধিতা করেছিলাম।’
এদিকে নতুন সিদ্ধান্তের বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব বলেন, ‘নতুন সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে এককভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে ফজলির জিআই সনদ দিলে বেশি খুশি হতাম।’
উল্লেখ্য এর আগে ২০১৭ সালে ক্ষীরসাপাত আমেরও জিআই সনদ পেয়েছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জ।