ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে যাওয়ার পথে ছাত্রদলের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
হামলায় ছাত্রদলের ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২০ জন গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রাকিবুর ইসলাম রাকিব।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাছে এই ঘটনা ঘটে।
হামলায় ছাত্রদলের ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২০ জন গুরুতর আহত। ছবি: নিউজবাংলা
পদ্মা সেতু ইস্যুতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবেশ করে ছাত্রদল।
ছাত্রলীগের অভিযোগ, সেই সমাবেশে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। এরপর থেকেই ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল ইউনিটের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে ছাত্রদলকে প্রতিহতের ঘোষণা দেন।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদকের সেই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করার কথা ছিল ছাত্রদলের।
তবে এর আগেই ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল ইউনিটের নেতা-কর্মীরা সকাল ৯টা থেকে মধুর ক্যান্টিন, টিএসসি এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে অবস্থান নেয়া শুরু করেন।
ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা ঢাকা মেডিক্যাল থেকে শহীদ মিনার হয়ে টিএসসিতে যাওয়ার পথে সেখানে অবস্থান নেয়া ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা হামলা চালান।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘আমাদের সাধারণ সম্পাদক সেদিন কী বক্তব্য দিয়েছেন সেটি ব্যাখ্যা করার জন্য আজকে আমরা সংবাদ সম্মেলন ডেকেছি। এরপর আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের গেট থেকে শহীদ মিনার হয়ে পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী টিএসসিতে যাচ্ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে আমরা কোনো স্লোগান দেইনি। এরপর বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগ কর্মীরা আমাদের সামনে আসে। আমরা তাদের কাছে জানতে চেয়েছি আমাদের অপরাধ কী, কেন আমাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে? তারা কোনো উত্তর না দিয়ে আমাদের ওপর হকিস্টিক, লোহার রড, স্ট্যাম্প, চাপাতিসহ আক্রমণ করে। এ সময় আমাদের নারীনেত্রী লাঞ্ছিতসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন।’
ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘ছাত্রলীগ বলছে আমরা তাদের নেত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করেছি। কিন্তু কোন বক্তব্যে কটূক্তি করেছি সেটা তারা স্পষ্টভাবে বলতে পারছে না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ছাত্রদলের প্রতি সাধারণ ছাত্ররা আকৃষ্ট হচ্ছে এবং জনপ্রিয় সংগঠনে পরিণত হচ্ছে দেখে ঈর্শ্বান্বিত হয়ে ছাত্রলীগ আমাদের ওপর হামলা করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি অভিযোগ করে আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘এই পরিস্থিতি হতে পারে ধারণা করে আমি সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কয়েকজনকে অনেকবার ফোন দিয়েছি। কিন্তু তারা কেউ ফোন রিসিভ করেনি। আমরা আহত হওয়ার পর আজকেও ফোন দিয়েছি কিন্তু কেউই রিসিভ করেনি।’
হামলার অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনকে ফোন দেয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।