একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বিরুদ্ধে তিন দাবিসংবলিত স্মারকলিপি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দিয়েছেন ইসলামিক কালচারাল ফোরাম নামের একটি সংগঠনের নেতারা।
এসব দাবি নিয়ে সোমবার তারা দুদক সচিব মাহবুব হাসানের সঙ্গে দেখা করেন।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও আলেমদের বিরুদ্ধে গণকমিশনের দেয়া অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে দুদকে পাল্টা এই স্মারকলিপি দেয় ইসলামিক কালচারাল ফোরাম।
কী আছে স্মারকলিপিতে
ইসলামিক কালচারাল ফোরাম তাদের স্মারকলিপিতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়-ব্যয় ও তহবিলের উৎস সম্পর্কে অনুসন্ধান, নির্মূল কমিটির নেতাদের সম্পদের উৎস ও আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং গণকমিশনের শ্বেতপত্রের অর্থের জোগানদাতার তথ্যের খোঁজ নেয়ার দাবি জানায় দুদক সচিবের কাছে।
দুদকে যাওয়া দলটির নেতৃত্ব দেন ফোরামের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন মাওলানা নাজমুল হক, আবু জাফর কাসেমী, মানসুরুল হক, আবুল কাসেম আশরাফি, রিয়াদুল ইসলাম, মুফতি আব্দুর রাজ্জাক কাসেমী, ওয়াহিদুল আলম, আব্দুর রহিম কাসেমী, আলহাজ ফজুলল হক ও হাফেজ মাওলানা মোতাহার উদ্দীন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ফোরাম নেতারা। তাদের একজন বলেন, ‘আমরা দুদক চেয়ারম্যানকে বলেছি, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যে মিথ্যা ও বানোয়াট, অসত্য, কৃত্রিম তথ্য দিয়ে ইসলাম ও কওমি মাদ্রাসাবিরোধী মানহানিকর তাণ্ডব চালাল, বিষোদগার করেছে, তা যে সম্পূর্ণ মিথ্যা, তা আপনারা তদন্তের পর দেখতে পারবেন। তারা গণকমিশন নামে সংবিধান পরিপন্থি যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাও রাষ্ট্রের সংবিধানবিরোধী।’
অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কওমি মাদ্রাসার শিক্ষকরা নীরবে, নিভৃতে দেশ ও জাতি গঠনে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা দেশের এতিম, মিসকিন, দরিদ্র, নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে কওমি মাদ্রাসায় দেশ ও জাতির সেবায় গড়ে তুলছি।
‘এ জন্য কিন্তু আমরা রাষ্ট্র থেকে কোনো পয়সা নিচ্ছি না। গত করোনার দুই বছর কিন্তু আমরা আমাদের শিক্ষকদের বেতনও দিতে পারিনি।’
প্রেক্ষাপট
গত ১১ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লার কাছে শ্বেতপত্র ও সন্দেহভাজন শতাধিক ব্যক্তির তালিকা হস্তান্তর করে ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন’।
কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সদস্যসচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল এ তালিকা হস্তান্তর করে।
গণকমিশনের তালিকায় সন্দেহভাজন হিসেবে ১১৬ জনের নাম রয়েছে। শ্বেতপত্র ও তালিকাটি একই সঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনেও দেয়া হয়েছে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক ককাসের যৌথ উদ্যোগে গঠন করা হয় গণকমিশন।
এর আগে ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন’ শীর্ষক শ্বেতপত্রটির মোড়ক উন্মোচন করা হয় ১২ মার্চ।