সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয়ে গার্ডরা ইয়ারব হোসেন নামের এক সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের গার্ড ডেকে দৈনিক মানবজমিনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ইয়ারবকে ইচ্ছেমতো পিটিয়েছেন।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরা পাউবো কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সদর উপজেলার তুজুলপুর গ্রামের মাছুম বিল্লাহ্ বলেন, ‘সাংবাদিক ইয়ারব গাড়ি থেকে নেমে পানি উন্নয়ন বোর্ড-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়েরের রুমের সামনে যান। মুহূর্তেই আবুল খায়ের বেরিয়ে সিকিউরিটি গার্ডদের ইশারায় ডাক দেন। গার্ডরা লাঠি নিয়ে ছুটে এসেই ইয়ারবকে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করেন। তিনি হাত, বুক ও পেটে আঘাত পেয়েছেন।’
ইয়ারবের অভিযোগ, ‘বেতনা নদীতে খনন কাজ চলছে। আমি খনন বিষয়ে তথ্য নিতে পাউবো অফিসে যাই। প্রকৌশলী আবুল খায়েরের রুমের সামনে গেলে তিনি বেরিয়ে সিকিউরিটি গার্ডদের লাঠি নিয়ে আসার ইশারা দেন।
‘মুহূর্তের মধ্যেই লাঠি নিয়ে আমার ওপর হামলে পড়ে গার্ডরা। এ সময় অন্যরাও এসে যোগ দেয় হামলায়। তারা লাঠি দিয়ে পেটানোসহ ইচ্ছামতো চড়, কিল, ঘুষি মারতে থাকে। আমার মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নিয়েছে তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘হামলায় উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন, উপসহকারী কর্মকর্তা তন্ময় কুমার, সিকিউরিটি গার্ড প্রধান শহিদুল ইসলামসহ অফিসের ১০-১৫ জন যোগ দেন।’
ঘটনাটি জানাজানি হলে জেলার কর্মরত সাংবাদিকরা ছুটে যান পাউবো কার্যালয়ে।
দুপুর ১২টার দিকে পাউবো কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন শতাধিক সাংবাদিক। প্রকৌশলী খায়েরসহ জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
সাংবাদিক আকরামুল ইসলামের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জী, এম কামরুজ্জামান, মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, আসাদুজ্জামান আসাদ, মনিরুল ইসলাম মনি, রেজাউল ইসলাম, ফিরোজ হোসেন, বেলাল হোসাইন, এসএম নজরুল ইসলাম, সুকুমার দাস বাচ্চু, পাউবো ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় ছাত্র সমাজ নেতা আকরাম হোসেন খান বাপ্পি, গণফোরাম নেতা আলী নুর খান বাবুল।
প্রকৌশলী খায়েরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে সাত দিনের মধ্যে তার অপসারণসহ জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আকরামুল ইসলামসহ সাংবাদিকরা।
দাবি আদায়ে ৭২ ঘণ্টা পর সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে পাউবো কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানান সাংবাদিকরা।
সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই মিনাজ বলেন, ‘খবরটি পেয়েই ঘটনাস্থলে এসেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। থানায় অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের মারপিটের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সাংবাদিক ইয়ারব আমার সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। মারপিটের বিষয়টি হাস্যকর। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’