বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টানেলের পেছনে আলো দেখে উৎফুল্ল ফখরুল

  •    
  • ২২ মে, ২০২২ ১৮:০৭

‘আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের বিজয় অবশ্যই অর্জিত হবে। জেগে উঠতে হবে সকলকেই। নিজেকে রক্ষা করবার জন্য, সাংবাদিকদের স্বার্থকে রক্ষা করবার জন্য, মানুষকে রক্ষা করবার জন্য, এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌ্মত্বকে রক্ষা করবার জন্য আমাদের সকলকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জেগে উঠতে হবে, পরাজিত করতে হবে এই ভয়াবহ দানবীয় ফ্যাসিবাদী শক্তিকে।’

সরকার পরিবর্তনের চেষ্টায় আন্দোলনে ‘আশার আলো’ দেখতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ‘টানেলের পেছনে আলো’ দেখতে পারার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপি আয়োজিত গণমাধ্যমসংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব জানান, ক্ষমতার পরিবর্তনে তারা বেশ আশাবাদী। বলেন, ‘আমরা খুব আশাবাদী। বাংলাদেশের মানুষ কখনও পরাজিত হয়নি। টানেলের পেছনে আলো দেখছি বলেই পুনরায় আমরা উৎসাহিত বা উৎফুল্ল হচ্ছি তাই নয়, আমরা সব সময় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবার জন্য কাজ করেছি, কাজ করে যাচ্ছি। সরকারে যখন ছিলাম তখনও করেছি, সরকারে নেই এখনও গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।'

তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের বিজয় অবশ্যই অর্জিত হবে। জেগে উঠতে হবে সকলকেই। নিজেকে রক্ষা করবার জন্য, সাংবাদিকদের স্বার্থকে রক্ষা করবার জন্য, মানুষকে রক্ষা করবার জন্য, এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করবার জন্য আমাদের সকলকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জেগে উঠতে হবে, পরাজিত করতে হবে এই ভয়াবহ দানবীয় ফ্যাসিবাদী শক্তিকে।

দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আজকে গোটা জাতি বিপন্ন হয়ে পড়েছে, বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এই জাতি বা রাষ্ট্রকে উদ্ধার করতে হলে একটা ইস্পাতদৃঢ় ঐক্য সকল জনগণের মধ্যে সৃষ্টি করতে আমরা যদি না পারি তাহলে এখান থেকে মুক্ত হওয়ার কোনো পথ নেই।'

ডিজিটাল আইন বাতিলের অঙ্গীকার

আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ সকল ধরনের নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করবে বলে জানান ফখরুল।

বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার ঘোষণা, আমরা সরকার গঠন করলে মুক্ত গণমাধ্যমের অন্তরায় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ সকল ধরনের নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করব। গণমাধ্যমে প্রকাশিত যেকোনো বিষয় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা সংস্থা প্রেস কাউন্সিলে ফয়সালা না করে কোনোভাবেই যেন আদালতে মামলা করতে না পারেন সেটা নিশ্চিত করা হবে।'

গণমাধ্যমকে স্বাবলম্বী করতে বিএনপি বিজ্ঞাপনের সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা করবে বলেও জানান দলটির মহাসচিব। বলেন, ‘পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট সংখ্যক প্রকাশনা, প্রচারণা কিংবা টিআরপির ভিত্তিতে গণমাধ্যমগুলোকে আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার চিন্তাও বিএনপির রয়েছে। দেশের ব্যবসা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন বিজ্ঞাপন প্রদানের ক্ষেত্রে দেশীয় গণমাধ্যমগুলোকে অগ্রাধিকার দেয় সেটি নিশ্চিত করার পরিকল্পনাও আমাদের (বিএনপি) রয়েছে।'

সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড সব গণমাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারও করেন ফখরুল।

বলেন, ‘সাংবাদিকরা তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন, রাজনীতিবিদরা তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন- এর মধ্যে একটা ঐক্য সৃষ্টি করে আমরা যেন দেশে গণতন্ত্রকে পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে আনতে পারি সেই উদ্যোগটা গ্রহণ করা উচিত।'

‘নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশে কমছে র‍্যাংকিং’

জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র হত্যায় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ আইন, প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সাংসদ জহির উদ্দিন স্বপন।

মূল প্রবন্ধে ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার’ প্রকাশিত র‍্যাংকিংয়ে গত এক বছরে বাংলাদেশ ১০ ধাপ পিছিয়ে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৬২ তম হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বলা হয়, এর পেছনে নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশগুলো দায়ী।

বলা হয়, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, আইসিটি অ্যাক্ট, দ্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন রেগুলেশন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড ওটিটি প্লাটফর্মস-২০১২, ওভার দ্য টপ(ওটিটি) কনটেন্টভিত্তিক পরিষেবা প্রদান ও নীতিমালা-২০২১, অফিশিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট প্রভৃতির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে এমনভাবে চেপে ধরার ব্যবস্থা করা হয়েছে যে তারা শুধু সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে।

মামলা ও হয়রানির ভয়ে বেশির ভাগ মিডিয়া সেলফ সেন্সরশিপ আরোপ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রবন্ধে। বলা হয়, ‘পাশাপাশি বিজ্ঞাপন বণ্টনের বৈষম্য, বেতন বোর্ড বাস্তবায়নে মালিকপক্ষের অনীহা প্রভৃতি কারণে বেশির ভাগ গণমাধ্যমকর্মীকে চরম আর্থিক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয় ফলে সৎ ও মেধাবী সাংবাদিকরা ধীরে ধীরে এই পেশার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।’

‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিএনপির আমলের করা’

মতবিনিময় সভায় প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, ‘আইসিটি আইন যেটি সংশোধন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৩ সালে, সেই আইনটি কিন্তু প্রথম চালু করা হয়েছিল বিএনপির আমলেই। শাস্তিটা আওয়ামী লীগ বাড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, আপনাদের যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন, গণতন্ত্রের পক্ষে আপনাদের লড়াই সেই কথা আমরা তুলে ধরব। আবার সরকার যদি অন্যায় সিদ্ধান্ত নেয়, স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত নেয়, কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা করে বা করে থাকে অবশ্যই তারও প্রতিবাদ করব।'

যুগান্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক মাহবুব কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশে অসংখ্য আইন আছে যা আমাদের দেশে স্বাধীন ও মুক্ত গণমাধ্যমের পরিপন্থি। প্রত্যেকটি আইন সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের জন্য পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে হুমকিস্বরূপ।’

বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় আলোচনায় সাংবাদিকদের মধ্যে রুহুল আমীন গাজী, রেজোয়ান সিদ্দিকী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, এম এ আজিজ, নুরুল আমিন রোকন, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, কামাল উদ্দিন সবুজ, বাকের হোসাইন, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, কাদের গনি চৌধুরী, ইলিয়াস খানও বক্তব্য রাখেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর