বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘প্রিমিয়াম টি’র নামে কী খাচ্ছি

  •    
  • ২২ মে, ২০২২ ১৭:৫১

চা বিজ্ঞানী ডা. মাঈনউদ্দিন জানান, ‘কিছু ভালো চা পাতাকে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির চা পাতা বলা হয়। এর আলাদা কোনো জাত নেই। আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত ২১টি চা গাছের ভ্যারাইটি বের করা হয়েছে, যেগুলো বিটি-১ (বাংলাদেশ টি), বিটি-২ এমন বিভিন্ন নামে আছে।’

বাজারে ‘প্রিমিয়াম টি’ নামে চা পাওয়া যায়। ক্যানসার প্রতিরোধক, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ওজন হ্রাস, হার্ট ভালো রাখে, হজমশক্তি বাড়ায়, মানসিক চাপ কমায়— এমন নানা উপকারিতা তুলে ধরে বিক্রি হয় এই চা। ফলে ভোক্তাদের কাছে এই চায়ের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।

কী কারণে প্রিমিয়াম টি বলা হচ্ছে, এর বৈশিষ্ট্য কী— এসব জানতে নিউজবাংলা কথা বলেছে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে।

শ্রীমঙ্গলের একজন খুচরা চা বিক্রেতা রাজু ঘোষ বলেন, ‘প্রিমিয়াম টি ভালো চা পাতা, তবে এটা আলাদা কোনো জাত নয়। সাধারণত চায়ের ভালো যে জাত রয়েছে, যেমন বিটি-২, কর্ণফুলী, কোদালি এগুলার মিশ্রণে যে চা বিক্রি করা হচ্ছে তাই প্রিমিয়াম টি নামে পরিচিত। এই চায়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ আছে অনেক। বিশেষ করে বিত্তবানদের কাছে এই চায়ের কদর বেশি।

‘কোনো একটি চায়ের স্বাদ ভালো, কোনোটিতে রং ও কোনোটির গন্ধ ভালো। এই তিনটি চা পাতা যখন একসঙ্গে মিক্স করবেন, তখন গ্রাহক স্বাদ, গন্ধ ও রং সবই পাচ্ছেন। এটিকে প্রিমিয়াম বলে বিক্রি করা হয়।’

পদ্মা টি সাপ্লাইয়ের পরিচালক মেঘনাদ হাজরা বলেন, ‘প্রিমিয়ামটি আলাদা কোনো জাত নয়। তবে ভালো পাতাকে প্রিমিয়াম টি বলা হয়। চা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা চায়ের গাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের উন্নত গাছ তৈরি করেন, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিটি-২। এই চায়ের গন্ধ ও স্বাদ দুটোই ভালো।

‘সাধারণত এটিকেও প্রিমিয়াম টি বলা হয়। সেই সঙ্গে ভালো যেকোনো চা পাতাকে প্রিমিয়াম টি বলা হয়। বিটি-২ আড়াই পাতা (দুটি পাতা, একটি কুড়ি) থেকেই হয়। তবে এতে শুধু ব্ল্যাক টি না, গ্রিন টি বা ওয়াইট টিকেও প্রিমিয়াম বলা হয় যদি কোয়ালিটি ভালো হয়।’

মেঘনাদ হাজরা আরও বলেন, ‘আমি পাইকারি এবং খুচরা বিক্রি করি। এই চাপাতাগুলো যেহেতু কম উৎপন্ন হয়, তাই দাম ধরেও নির্দিষ্ট কোনো হিসাব থাকে না। দেখা গেল পাতা আছে এক লাখ কেজি, কিন্তু নিলামে ক্রেতা কম, ফলে স্বাভাবিকভাবে দাম কমবে আবার চাহিদা বেশি থাকলে বাড়বে।

‘কিছু বাগান আছে, যারা আবহাওয়া এবং সময়ের ওপর নির্ভর করে চা গাছে আলাদা চর্চা করে, ফলে তার চা পাতা স্বাদে ও গন্ধে ভালো হয়।’

পাথখোলা চা বাগানের ব্যবস্থাপক সামশুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘প্রিমিয়াম টি বলতে কোনো জাত নেই। যেকোনো ভালো জিনিসকেই আমরা প্রিমিয়াম টি বলি।’

সম্প্রতি মিডিয়ায় কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে জানিয়ে আরেক চা বাগানের ব্যবস্থাপক বলেন, ‘প্রিমিয়াম টি বলতে কিছু নেই। বাজারে যা প্রিমিয়াম বলা হচ্ছে, তা ব্যবসায়ীরা নিজেদের প্রয়োজনে এবং স্বার্থে প্রিমিয়াম টি বলছে। চায়ের অনেক জাত রয়েছে, এখানে কোনটিকে প্রিমিয়াম বলা যাবে, কোনটিকে বলা যাবে না তার মানদণ্ড নেই।

‘যে যার সুবিধামতো প্রিমিয়াম টি নাম দিয়ে যাচ্ছে। যদি কোনো ভোক্তা প্রিমিয়াম টি কে আলাদা টি মনে করে কেনেন, তবে তিনি প্রতারিত হচ্ছেন।’

বাংলাদেশ চা সংসদ সিলেট ভ্যালির চেয়ারম্যান জি এম শিবলিও একই তথ্য দেন। তিনি জানান, প্রিমিয়াম টি নামে আলাদা কোনো জাত নেই। যারা বাজারে বিক্রি করে তারা নিজেরা ব্র্যান্ডিং করছে এই নামে। বিটি-২, বিটি-৩ বা বিটি-১ এ রকম চায়ের অনেক জাত রয়েছে। তার মধ্যে একেকজনের কাছে একেকটা ভালো লাগে।’

চা বিজ্ঞানী ডা. মাঈনউদ্দিন জানান, ‘কিছু ভালো চা পাতাকে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির চা পাতা বলা হয়। এর আলাদা কোনো জাত নেই। আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত ২১টি চা গাছের ভ্যারাইটি বের করা হয়েছে, যেগুলো বিটি-১ (বাংলাদেশ টি), বিটি-২ এমন বিভিন্ন নামে আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর