বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘সম্পত্তি লিখে না দেয়ায়’ বৃদ্ধকে শিকলবন্দি, পুলিশের উদ্ধার

  •    
  • ২২ মে, ২০২২ ১২:৫৫

কেন্দুয়া থানার ওসি আলী হোসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাককে উদ্ধার করেছি। জবানবন্দিতে তিনি তাকে বন্দি করে রাখার জন্য স্ত্রী হামিদাসহ তিন ছেলে সেলিম, শাহীন ও মামুনকে দায়ী করেছেন। আমরা হামিদা ও সেলিমকে আটক করি। এ ব্যাপারে শনিবার রাতে আব্দুর রাজ্জাক মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’

নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় এক বৃদ্ধকে শিকলবন্দি করে রাখার দেড় মাস পর স্থানীয় থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বৃদ্ধের স্ত্রী ও এক ছেলেকে। সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় আব্দুর রাজ্জাক নামের ওই বৃদ্ধকে বসতঘরে শিকলবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী হোসেন নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন

শনিবার বিকেলে স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীদের সহযোগিতায় চিরাং ইউনিয়নের মনাটিয়া গ্রামের বসতঘর থেকে শিকলবন্দি অবস্থায় ৭০ বছর বয়সী আব্দুর রাজ্জাককে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন তার স্ত্রী হামিদা আক্তার ও বড় ছেলে সেলিম মিয়া।

আব্দুর রাজ্জাক জানান, তার নিজ নামে বসতবাড়িসহ এক একরের মতো সম্পত্তি রয়েছে। তার স্ত্রী ও তিন ছেলে দীর্ঘদিন ধরে ওই সম্পত্তি তাদের নামে লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন। তবে তাদের দুরভিসন্ধি আঁচ করতে পেরে তিনি তাতে রাজি হচ্ছিলেন না।

তিনি বলেন, ‘এ কারণে গত ৫ এপ্রিল থেকে তারা আমাকে শিকলবন্দি করে রাখেন। আমার বাম পায়ে লোহার শিকল পরিয়ে বসতঘরের চৌকির খুঁটির সঙ্গে আটকে রাখা হয়।’

প্রতিনিয়ত আমাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবেও নির্যাতন করা হতো দাবি করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘গত ঈদের দিনেও তারা আমাকে এভাবে বন্দি করে রাখে। তারা আমাকে ঠিকমতো খাবার খেতেও দিত না।’

কেন্দুয়া উপজেলার মানবাধিকারকর্মী ও কল্যাণী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কল্যাণী হাসান বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে আমি বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাককে বন্দি করে রাখার খবর পাই। পরে শনিবার বিকেলে কেন্দুয়া থানা পুলিশের একটি টিমসহ সরেজমিনে বৃদ্ধের বাড়িতে গিয়ে তাকে চৌকির খুঁটির সঙ্গে বন্দি করে রাখতে দেখি।

‘তখন আমি নিজ হাতে তাকে শিকলমুক্ত করি। এ সময় একটি বিবর্ণ লুঙ্গি ছাড়া তার গায়ে আর কোনো কাপড় পর্যন্ত ছিল না। উদ্ধারের সময় বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্রের মানবাধিকারকর্মী শাহ আলী তৌফিক রিপন ও স্থানীয় সাংবাদিক মজিবুর রহমানও উপস্থিত ছিলেন।’

রিপন বলেন, ‘বৃদ্ধের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন আছে। উদ্ধারের পর অঝরে কাঁদেন তিনি।’

কল্যাণী হাসান বলেন, ‘আমরা যখন ওই বাড়িতে যাই, তখন বৃদ্ধের স্ত্রীসহ অন্যরা আমাদের ওপরও চড়াও হতে আসেন। তবে পুলিশ উপস্থিত থাকায় তারা হামলা করতে পারেননি।’

কেন্দুয়া থানার ওসি আলী হোসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে বৃদ্ধ আব্দুর রাজ্জাককে উদ্ধার করেছি। জবানবন্দিতে তিনি তাকে বন্দি করে রাখার জন্য স্ত্রী হামিদাসহ তিন ছেলে সেলিম, শাহীন ও মামুনকে দায়ী করেছেন। আমরা হামিদা ও সেলিমকে আটক করি। এ ব্যাপারে শনিবার রাতে আব্দুর রাজ্জাক মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’

আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী ও ছেলেরা দাবি করেন, তিনি তার সহায়সম্পত্তি অন্যদের কাছে বিক্রি বা লিখে দেয়ার পাঁয়তারা করছিলেন। সম্পত্তি রক্ষার জন্যই তারা তাকে বন্দি করে রাখেন।

এ বিভাগের আরো খবর