রংপুরের বদরগঞ্জের দামুদারপুর হাটখোলা বাজারে এক পরিবারের সবাইকে অচেতন করে এবং স্বামীর হাত-পা বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি শুক্রবার গভীর রাতে ঘটলেও শনিবার সন্ধ্যার পর তা জানাজানি হয়।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিলন হোসেন নামের এক তরুণকে শনিবার রাত ৮টার দিকে আটক করেছে পুলিশ।
গৃহবধূর স্বামীর বরাত দিয়ে বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর স্বামী আর ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা একে অপরের বন্ধু। শুক্রবার দিনের বেলায় সারা দিন তারা একসঙ্গে ঘোরাঘুরি করেন। রাতে ওই গৃহবধূর শাশুড়ি তাদের রান্না করে খাওয়ান। কিন্তু কৌশলে ওই গৃহবধূ, তার শ্বশুর-শাশুড়ি আর স্বামীর খাবারে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দেয় ধর্ষণে অভিযুক্তরা।
ভাত খাওয়ার পর তারা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে ঢুলতে থাকেন এবং নিজেদের কক্ষে ঘুমাতে যান। রাত ১টার দিকে ওই গৃহবধূর কক্ষে প্রবেশ করে অভিযুক্ত তিনজন। এ সময় তারা তাদের বন্ধুর হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে মুখে টেপ লাগিয়ে তার প্রায় অচেতন স্ত্রীকে ধর্ষণ করে।
একপর্যায়ে জ্ঞান ফিরে এলে ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
শনিবার সকালে ভুক্তভোগী গৃহবধূসহ তার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এক প্রতিবেশী বলেন, ‘মধ্যরাতে ওই বাড়িতে কেমন যেন শব্দ হচ্ছিল। কান খাড়া করে শুনি মানুষের গোঙানি। একটু পর চিৎকার করোছে। যায়া দেখি, বউটা খাটের ওপরে পড়ি আছে। স্বামীটার হাত-পা দড়ি দিয়ে বান্ধা। স্বামী ও স্ত্রী দুজনই পাগলার মতো কেমন যেন করোছে। তখনও পাশের ঘরোত শাশুড়ি অজ্ঞান হয়া আছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ওই পরিবারের সদস্যরা বিষাক্ত কিছু খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ওই গৃহবধূকে তার বাবা উন্নত চিকিৎসার কথা বলে নিয়ে গেছেন।’
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর বাবা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যারা আমার মেয়ের ক্ষতি করছে, তাদের বিচার চাই।’
বদরগঞ্জ থানার ওসি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জানার পরই ঘটনাস্থলে যাই। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতাও মিলেছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিলন হোসেন নামের এক তরুণকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্য ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশ মাঠে আছে।’
তিনি জানান, এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।