এক বছর আগে ভারতে তরুণীকে নৃশংস যৌন নির্যাতনের ঘটনায় সেখানে গ্রেপ্তার বাংলাদেশের রিফাদুল ইসলাম হৃদয় বা ‘টিকটক’ হৃদয়সহ সাত বাংলাদেশিকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে দেশটির এক আদালত। এ ছাড়া আরও চারজনকে বিভিন্ন মেয়াদের সাজাও দিয়েছে ওই আদালত।
শুক্রবার বেঙ্গালুরুর একটি বিশেষ আদালত এ রায় দেয়।
সে সময় ভারত, বাংলাদেশের প্রধান সব পত্রিকার শিরোনামে উঠে এসেছিল বাংলাদেশি তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনাটি। দেশটির কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে ওই তরুণীকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
তখন দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নড়েচড়ে বসে। গ্রেপ্তার করা হয় হৃদয়সহ ১২ জনকে। যার মধ্যে ১১ জনই বাংলাদেশি।
দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সে সময় জানায়, ওই ১১ বাংলাদেশিই ভারতে ঢুকেছে অবৈধভাবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত ৫৪ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এই রায় দেন। যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন চাঁন মিয়া, রিফাদুল ইসলাম হৃদয়, আল আমিন হোসেন, রাকিবুল ইসলাম, বাবু শেখ, মোহাম্মদ ডালিম ও আজিম হোসেন।
২০ বছর দণ্ড দেয়া হয়েছে তানিয়া খান নামে এক আসামিকে। আর মোহাম্মদ জামালকে দেয়া হয় পাঁচ বছরের দণ্ড।
ফরেন অ্যাক্টের অধীনে অভিযুক্ত আরও দুজনকে ৯ মাস করে সাজা দিয়েছে বেঙ্গালুরুর ওই আদালত। এ ছাড়া একজনকে খালাস দিয়েছে বিশেষ ওই আদালত।
সে সময় ব্যাপক আলোচিত ঘটনাটি নিয়ে ভারতের ইউনিয়ন মিনিস্টারও টুইট করেছিলেন।
চক্রটি ওই তরুণীকে নির্যাতনের সময় ভিডিও ধারণ এবং ক্লিপ আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পরই নর্থ ইস্ট পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
অভিযুক্তদের তথ্য পেতে আসাম পুলিশ তাদের ছবিও আপ করে টুইটারে। এরই একপর্যায়ে বেঙ্গালুরুর একটি সেলফোন থেকে ভিডিওটি ছড়ানোর বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর বেঙ্গালুরু সিটি পুলিশকে সতর্ক করা হয় এবং একটি বিশেষ দল কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের শনাক্ত করে। তাদের গ্রেপ্তার করা হয় একটি ভাড়া বাসা থেকে।
তাদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনসহ বেশ কয়েকটি ধারায় মামলা করে পুলিশ।
আর মামলার পর তাদের বিরুদ্ধে ২৮ দিনে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এরপর শুরু হয় বিচার, যা প্রায় এক বছরের মাথায় এসে রায় দিল দেশটির বিশেষ আদালত।