বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিকেলে মাদ্রাসায় রেখে গেলেন মা, সকালে মিলল মরদেহ

  •    
  • ২১ মে, ২০২২ ১৯:৫০

ফেনী মডেল থানার ওসি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাদ্রাসা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে ইফাতের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জোনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

ফেনীর পুলিশ লাইনস এলাকার মিছবাহুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ মাদ্রাসা ভবনের পাশের রাস্তা থেকে এক শিশু শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার সকালে মরদেহ উদ্ধারের খবর নিশ্চিত করেছেন ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুর রহিম সরকার।

ওই শিক্ষার্থীর নাম ইস্রাফিল হোসেন ইফাত। তার বয়স ১৪ বছর। সে জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথ ইউনিয়নের সাতঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। শিশুটির বাবা ইয়াসিন ওমান প্রবাসী।

ইফাত মিছবাহুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল।

কী ঘটেছিল

ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মো. ইউনুছ জানান, পাঁচ দিন আগে ইফাত মাদ্রাসা থেকে চলে যায়। শুক্রবার বিকেলে ওর মা জোর করে মাদ্রাসায় রেখে যান। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষ ইফাতকে মাদ্রাসায় রাখতে অস্বীকৃতি জানালেও তার মা রেখে যান।

শনিবার ভোরে পড়ার সময় তাকে ক্লাসে দেখতে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর বাড়ির মালিক হাজি রিয়াজ উদ্দিন তাকে খবর দেন এক ছাত্রের মরদেহ ভবনের পাশে রাস্তায় পড়ে আছে।

পরে ৯৯৯-এ কল করা হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

স্বজনরা যা বলছেন

ইফাতের নানা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে ইফাত ওই মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গেলে সে মাকে জানায়, শিক্ষকরা তাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেন। এজন্য সে আর মাদ্রাসায় ফিরে যাবে না।

‘পরে ছুটি শেষে গত ৭ মে ইফাতকে মা লায়লা আনজুমান সুমি ফের মাদ্রাসায় রেখে যান। ৮ মে ইফাতকে ডিম আনতে দোকানে পাঠায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ডিম আনতে গিয়ে টাকা হারিয়ে ফেললে সে মাদ্রাসায় ফিরে যায়নি।

‘পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পরিবারকে জানালে চার দিন পর শহরের অ্যাকাডেমি এলাকা থেকে ইফাতকে খুঁজে পেয়ে তার মা শুক্রবার বিকেলে ছেলেকে ফের মাদ্রাসায় দিয়ে যান।’

ইফাতের চাচা ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘২৮ পাড়া কুরআন শরীফ মুখস্ত করা ইফাতকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ রাখতে না চাইলে শিক্ষার্থীর মা কাকুতি-মিনতি করে মাদ্রাসায় রাখতে অনুরোধ করেন। ওই সময় ইফাতের মায়ের কাছ থেকে ছেলের কিছু হলে দায় নেবে না মাদ্রাসা, এমন একটি নথিতে সই নেন প্রধান শিক্ষক।

‘শনিবার সকালে মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক ইফাতের বাড়িতে ফোন করে তা মাকে জরুরিভিত্তিতে আসতে বলে কল কেটে দেন। পরে মা মাদ্রাসায় এসে ছেলের মরদেহ দেখতে পান।

‘মাদ্রাসায় থাকা এক শিক্ষক ইফাতের মাকে জানান, মাদ্রাসার ছয়তলা ভবন থেকে পড়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।’

ঘটনার পর প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরাও পালিয়ে যান বলে চাচা দাবি করেন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান।

ফেনী মডেল থানার ওসি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাদ্রাসা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে ইফাতের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জোনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

‘ঘটনাস্থল থেকে একটি ভাঙা বালতি জব্দ করা হয়েছে। মামলার কার্যক্রম চলমান। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনার তদন্ত করছেন।’

এ বিভাগের আরো খবর