বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঝড়ের দিনে আম কুড়ানো

  •    
  • ২১ মে, ২০২২ ১৭:১৭

গ্রামগঞ্জে অহরহ দেখা গেলেও শহুরে জীবনে এ দৃশ্য ভার। ঝড়ে আম কুড়ানোর হারিয়ে যাওয়া সেই দৃশ্য দেখা গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। সদরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শুক্রবার বিকেলে আম কুড়ানোর ধুম পড়ে। অনেকেরই ছিল এটি প্রথম অভিজ্ঞতা।

চায়ের কাপে চলছিল তুমুল আড্ডা। হঠাৎ-ই পাল্টে যায় দৃশ্যপট, শুরু হয় তীব্র বাতাস। ঝড়ো হাওয়ায় টপাটপ পড়তে থাকে আম। আর সেগুলো কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ছেলে-বুড়োরা।

গ্রামগঞ্জে অহরহ দেখা গেলেও শহুরে জীবনে এ দৃশ্য ভার। ঝড়ে আম কুড়ানোর হারিয়ে যাওয়া সে দৃশ্য দেখা গেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। সদরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শুক্রবার বিকেলে আম কুড়ানোর ধুম পড়ে। অনেকেরই ছিল এটি প্রথম অভিজ্ঞতা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারাহ উলফাৎ রহমান অর্পিতা তার মা-বাবার কাছে শুনেছেন আম কুড়ানোর কথা। তবে শহুরে জীবনে আম কুড়ানোর কোনো সুখস্মৃতির সুযোগ হয়ে ওঠেনি তার।

অনেকটা আক্ষেপ নিয়েই বলছিলেন, ‘জীবনে কখনও ঝড়ের দিনে আম কুড়ানোই হয়নি, অন্যরা গেলেও আমাকে বাসা থেকে কখনও যেতে দেয়নি।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের হাসপাতাল রোড এলাকার জাহিদা ফেরদৌস মিম বলেন, ‘ঝড়ের সময় আম কুড়ানো আমাদের শহুরে জীবনে এখন অনেকটাই বিরল। তবে ঝড় হলে গ্রামে আম কুড়াতে যাওয়ার জন্য ছোট ছোট বাচ্চার মধ্যে প্রতিযোগিতা হয় রীতিমতো।

‘আমি একবার নানুবাড়িতে মামাতো বোনের সঙ্গে ঝড়ে আম কুড়িয়েছিলাম। ভাবতেই পারিনি প্রায় এক বস্তা আম কুড়াতে পারব আমরা। অন্য কোথাও এমন হয় কি না জানি না, তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম কুড়ানো সত্যি আনন্দের।’

শিবগঞ্জ উপজেলার পুখুরিয়া এলাকায় রাস্তার পাশের একটি বড় বাগানে দেখা যায় বেশ কয়েকজন শিশু আম খুঁজছে বাগানের মধ্যে। বাগানে থাকা কুঁড়েঘরে বসে আছেন বাগানটির পাহারাদার সাজেদুল ইসলাম।

তিনি জানান, কখনও আম কুড়ানোর ক্ষেত্রে কাউকে বাধা দেয়া হয় না। বছরের ফলে সবারই হক আছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার আম উদ্যোক্তা আহসান হাবিব জানান, ‘আম কুড়াতে তার বাগানে কাউকে কখনও বাধা দেয়া হয় না, সব বাগানেই একই নিয়ম, যে যখন খুশি ঝড়ে পড়া আম কুড়াতে পারে।’

এ উদ্যোক্তা জানান, ঢাকাসহ শহরে থাকাদের আম কুড়ানোর আনন্দ দিতে তিনি আগামী বছর থেকে তার বাগানে মেলার আয়োজন করবেন। সেখানে ঘুরে ঘুরে আম কুড়ানো বা গাছ থেকে আম পেড়ে খাওয়ার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা।

ড. মাযহারুল ইসলাম তরু বলেন, ‘আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ। এখানকার আম পৃথিবী বিখ্যাত। এ অঞ্চলজুড়ে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়, আম পাড়া থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত প্রতিটা ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষের কিছু না কিছু আনন্দ জড়িয়ে থাকে।

‘এখানে শ্রমিকরা যেমন আমের পরিচর্যা করেন, তারপর আম উঠে গেলে তারা যে উপার্জন করেন সেটা দিয়ে তাদের পুরো বছরের খরচ উঠে যায়। যারা প্যাকেট করে তাদের একটা অর্জন আছে, যারা ট্রাকে তোলে তাদের একটা অর্জন আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আবার গাছে যখন বড় বড় আম হয়, তখন বিভিন্ন ঝড়-ঝাপটায় আমগুলো পড়ে যায়। সে আমগুলো কুড়ানোর আবার একটা মজা আছে, আনন্দ আছে। আমরা যারা এ অঞ্চলের মানুষ তারা বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে আম কুড়িয়েই অনেক মজা করি।

‘এখানে একটা নিয়ম আছে যে, গাছ থেকে আম পড়ে গেলে সেটা যে পায়, সে সেটা নিয়ে নিতে পারে।’

এ বিভাগের আরো খবর