ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তার বন্ধ না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দিয়েছেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি।
সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, ‘এই অবৈধ সরকারের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ সময় অতিক্রম করছে প্রিয় মাতৃভূমি। ঈদুল ফিতরের পর অল্প কয়দিনের ব্যবধানে কোনো কারণ ছাড়াই কয়েকবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বারবার গ্রেপ্তারের চেষ্টা ছাত্র সমাজকে খুবই মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ করেছে। আমরা ছাত্রদল এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
সরকারকে ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে বলেন, ‘ক্ষমতার প্রথম মেয়াদ থেকেই বিরোধী দল ও মতের মানুষের ওপর খড়গহস্তে নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে আসছে৷ জেল-জুলুম আর অত্যাচার-নির্যাতনকেই ক্ষমতায় টিকে থাকার মানদণ্ড হিসেবে বেছে নিয়েছে৷ না হলে বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো বর্তমানে যখন নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সে সময় ছাত্রদল সভাপতিকে বারবার গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে হয়রানি, গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়৷’
আওয়ামী লীগ সরকার কোনোদিনই রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক৷ বলেছেন, ‘তাদের রাজনৈতিক শিষ্টাচারহীনতার বহু উদাহরণ এ দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে৷ সেই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলো ছাত্রদল সভাপতিকে বিনা কারণে বারবার গ্রেপ্তারে ও হয়রানির অপচেষ্টা।
‘ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ শুক্রবার দিবাগত রাতে ধানমন্ডিতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছিলেন৷ ওই সময় সাত-আটজন সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের প্যান্টের বেল্ট ধরে টানাহেঁচড়া করে তাকে তুলে নেয়ার চেষ্টা চালায়। তাদের সঙ্গে দুই গাড়ি পুলিশ ছিল। কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও তার সঙ্গে থাকা ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের ৪৫-৫০ নেতাকর্মীর ওপর পুলিশ অশালীন আচরণ ও মারধরের ঘটনা ঘটায়।
‘উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতিকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়ে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ ও কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুর রহমান বাবুকে বেধড়ক মারধর করে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়৷’
সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় থেকে বাসায় যাওয়ার পথে গুলশান থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশরাফুল ইসলাম জাসামকে কাকরাইল মোড় থেকে পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে যায়৷ অনেক খোঁজাখুঁজির পর আজ সকালে রাজধানীর ডিওএইচএস এলাকায় চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়৷’
অবিলম্বে আটক ছাত্রদলের সব নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া উপস্থিত ছিলেন।