সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানায় ২০১৬ সালের অক্টোবরে ১২০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধারের ঘটনাটি গোপন রেখেছিলেন পুলিশ সুপার (এসপি) আলতাফ হোসেন। সে সময় আটক ব্যক্তির নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাও হয়েছিল। ওই ঘটনার পাঁচ বছর পর চাকরিচ্যুত হয়েছেন আলতাফ।
গত বুধবার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিলেট অঞ্চলে দায়িত্বরত এসপি আলতাফ হোসেনকে চাকরি থেকে অপসারণের প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
কী আছে প্রজ্ঞাপনে
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২০১৬ সালের অক্টোবরে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানা পুলিশ বিপ্লব চ্যাটার্জি নামের এক চোরাকারবারির কাছ থেকে ১২০ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় থানায় স্বর্ণ চোরাচালানের মামলার পরিবর্তে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, স্বর্ণ উদ্ধারকে মাদক উদ্ধারের ঘটনা হিসেবে সাজানোর বিষয়টি জানা সত্ত্বেও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেননি সাতক্ষীরার তৎকালীন এসপি আলতাফ হোসেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে ঢাকার পুলিশ অধিদপ্তর থেকে ২০১৯ সালের ৪ মার্চ প্রস্তাব পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ৯ জুলাই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করাসহ অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী পাঠানো হয়।
২০১৯ সালের ৪ আগস্ট আলতাফ ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নেয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণীর জবাব দেন। একই বছরের ২১ অক্টোবর ব্যক্তিগত শুনানিতে উপস্থিত হন তিনি।
২০২০ সালের ২৫ জুন ঢাকা পুলিশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আতাউল কিবরিয়াকে বিভাগীয় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। আতাউল ২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণ হয়েছে বলে মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি আলতাফ কারণ দর্শানোর জবাব দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আলতাফকে চাকরিচ্যুত করতে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (বিপিএসসি) পরামর্শ চাওয়া হয়। বিপিএসসি আলতাফকে সরকারি চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে ২০২২ সালের ৪ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি পাঠায়।
বিপিএসসি প্রস্তাবিত দণ্ডের সঙ্গে একমত হওয়ায় আলতাফকে চাকরি থেকে অপসারণের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ সম্মতি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়।