ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে অলিভিয়া বন্দরে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের নিহত হবার পর কেটে গেছে দুই মাস।
তার মরদেহ দেশে আনার পর বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি) থেকে বলা হয়েছিল, এক সপ্তাহের মধ্যে দেয়া হবে ক্ষতিপূরণের অর্থ। এরপর ১০ সপ্তাহ পার হলেও এখনও মেলেনি ওই অর্থ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি। সেখানে নোঙর করা অবস্থায় গত ২ মার্চ জাহাজটি রকেট হামলার শিকার হয়। ওই হামলায় প্রাণ হারান জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান।
মৃত্যুর ১২ দিন পর সোমবার দুপুর সোয়া ১২টা ২০ তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হাদিসুরের মরদেহ হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে। রাত ১০টায় হাদিসুরের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়।
ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে বিলম্ব হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ)।
সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয়ে শুক্রবার বেলা ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ক্ষোভ জানান নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী। লিখিত বক্তব্য পড়েন সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাখওয়াত হোসেন।
নেতারা বলেন, বিএসসির সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অদক্ষতার কারণে ক্ষতিপূরণের টাকা যথাসময়ে পায়নি। অথচ তারা বলেছিল, এক সপ্তাহের মধ্যেই ক্ষতিপূরণ বুঝিয়ে দেবে।
সংগঠনের সভাপতি আনাম চৌধুরী বলেন, ‘তদন্ত কমিটিতে আমাদের দুজন প্রতিনিধি রাখার বিষয়ে দাবি জানালেও তা মানা হয়নি। বিএসসিতে মেরিনারদের বিষয়ে বোঝেন এমন লোক এখন নেই। প্রতিষ্ঠানটিতে অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে মেরিনার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব প্রতীয়মান। আমরা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হাদিসুর রহমানসহ বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের সকল নাবিক-ক্রুদের ক্ষতিপূরণের অর্থ বুঝিয়ে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্সকে অর্থ সহায়তার চেক দেয়া হয়। ছবি: নিউজবাংলা
সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শাখওয়াত হোসেন বলেন, ‘৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের কথা থাকলেও আমরা এখনও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন পাইনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটির সুষ্ঠু ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেশের সংবাদ মাধ্যমসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে জাহাজে রকেট হামলায় নিহত হাদিসুরের পরিবারকে ১০ লাখ ২৭ হাজার ১৭৭ টাকা তুলে দেয়া হয়। বিএমএমওএ সদস্য ও ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশন (আইটিএফ) এই অর্থ সহায়তা করে। চেক গ্রহণ করেন হাদিসুরের ছোট ভাই গোলাম মাওলা প্রিন্স।