কক্সবাজারের দুটি হোটেল থেকে দুই নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আলাদা হত্যা মামলা করেছে তাদের পরিবার।
বৃহস্পতিবার করা দুই মামলাতেই পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিচ হলিডে
হোটেল বিচ হলিডেতে ১৯ বছরের লাবণী আকতারের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার বাবা মনির হোসেন কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন। বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ওসি (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন।তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তরুণীর বাবা মামলাটি করেন। এতে চারজনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ২০ বছরের কামরুল আলম ও ২১ বছরের আরিফ রহমান নিলু আগে থেকেই আটক ছিলেন। মামলার পর তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ওসি জানান, আসামিদের মধ্যে পলাতক রয়েছেন শরীয়তপুরের নড়িয়ার ২১ বছরের যুবক তানজিল হাসান ও নারায়ণগঞ্জের ২০ বছরের মাহিম হাসান অনিক।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ওই তরুণী এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বের হয়েছিলেন। অভিযুক্ত চারজন কৌশলে তাকে কক্সবাজারে এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন।
ওসি সেলিম জানান, চার বন্ধুসহ ১১ মে কক্সবাজার আসেন লাবণী। কলাতলীর বিচ হলিডে নামের আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেন তারা। সেখানে ১৪ মে অসুস্থ হলে লাবণীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে ১৬ মে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ১৮ মে দুপুরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় তরুণীর সঙ্গে কক্সবাজারে আসা দুজনকে আটক করা হলেও অপর দুজন পালিয়ে যান। আটক দুজন জানিয়েছেন, তারা সবাই অতিরিক্ত মদ্যপান করেছিলেন।
রয়েল টিউলিপ
হোটেল রয়েল টিউলিপ থেকে বুধবার সন্ধ্যায় ২৯ বছরের মাফুয়া খানমের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তার ভাই ছৈয়দুল ইসলাম কক্সবাজারের উখিয়া থানায় মামলা করেছেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) গাজী সালাউদ্দিন।তিনি জানান, একজনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়, যাকে আটক করা হয়েছিল বৃহস্পতিবার দুপুরে। সন্ধ্যায় মামলার পর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ওসি জানান, বুধবার সকালে গোপালগঞ্জের মাফুয়া খানম দিনাজপুরের নাছির উদ্দিন নামের যুবকের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেল রয়েল টিউলিপে ওঠেন। দুপুরে খাবার শেষে দুজনই নিজেদের কক্ষে অবস্থান নেন।
এর কিছুক্ষণ পর মাফুয়ার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কথা বলে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেন নাছির। সেখানে চিকিৎসক মাফুয়াকে মৃত বলে জানান।
এজাহারে বলা হয়, প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে মাফুয়াকে কক্সবাজার এনে হত্যা করা হয়েছে।
মামলা হয়নি সী গালের ঘটনায়
কক্সবাজারের হোটেল সী গালে বুধবার রাতে মনিরুল ইসলাম নামের এক পর্যটকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়নি। এ ঘটনায় তার স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলে ওঠা ৩৫ বছরের লিজা রহমান ঊর্মিকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন।তিনি জানান, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে দুজন বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সী গাল হোটেলের ৭২৪ নম্বর কক্ষে অবস্থান নেন। সেখানে রাত সাড়ে ১২টার দিকে অসুস্থতা বোধ করলে মনিরুলকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হাসপাতালে রাত ১টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় স্ত্রী পরিচয়ে সঙ্গে থাকা নারীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনিরুল স্বামী নন বলে স্বীকার করেছেন ঊর্মি।