নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরার করা চাঁদাবাজির মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে উচ্ছ্বাস আলম ও ফাইনুল ইসলাম শাওন নামে ছাত্রলীগের দুজন সাবেক নেতাকে।
নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিলেট থেকে বুধবার দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম।’
স্থানীয়রা জানান, নড়াইল পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি উচ্ছ্বাস আলম। তার বাড়ি নড়াইল পৌর শহরের ভওয়াখালী গ্রামে। আরেক নেতা ফাইনুল ইসলাম শাওনের বাড়িও একই এলাকায়। তারা বর্তমানে ছাত্রলীগের কোনো কমিটিতে আছেন কি না, তা জানা যায়নি।
একটি চাঁদাবাজির মামলার আসামি হিসেবে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। মামলাটির বাদী নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পৌর মেয়র আঞ্জুমান আরা।
মামলাসূত্রে জানা গেছে, নড়াইল শহরের পুরাতন বাস টার্মিনালে পৌরসভার অস্থায়ী কার্যালয়। সেখানে গত ২৬ এপ্রিল হাট-বাজার, টার্মিনাল ইজারা বিষয়ে সভা চলছিল। বেলা দেড়টার দিকে সেখানে উপস্থিত হন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিলয় রায় বাঁধনসহ ৮-১০ জন। তারা মেয়রের কার্যালয়ে ঢুকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।
একপর্যায়ে তারা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির পাশাপাশি মেয়রকে হত্যার হুমকি দেন।
চাঁদা দাবির এ ঘটনায় মামলার পাশাপাশি পৌর পরিষদ জরুরি সভা করে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।
পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ তুলে পৌর পরিষদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়। আসামি গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হয়।
অন্যদিকে মেয়র আঞ্জুমান আরাকে দুর্নীতিগ্রস্ত দাবি করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল বের করেন স্থানীয় ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের একাংশ। তারা মেয়রের অপসারণ দাবি করেন।
উত্তপ্ত এ রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে পুলিশ বুধবার রাতে সিলেট থেকে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বলেন, ‘পৌর মেয়রের করা চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবীর জানান, আসামিরা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হুমকিসহ বিভিন্ন অভিযোগ আছে।