কক্সবাজারে ভ্রমণে এসে তিন পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। নিজেদের পরিচয় গোপন করে হোটেলে ওঠায় বিপাকে পুলিশ।
মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
চার বন্ধুর সঙ্গে গত ১১ মে কক্সবাজারে আসেন লাবনী আক্তার। কলাতলীর বিচ হলি ডে নামের একটি আবাসিক হোটেলে তারা ওঠেন। সেখানে গত ১৪ মে অসুস্থ হয়ে পড়লে মেয়েটিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে ১৬ মে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। সদর হাসপাতালে পাঁচ দিন ভর্তি ছিলেন ১৯ বছরের ওই তরুণী। ১৮ মে বুধবার বেলা ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তরুণীর সঙ্গে থাকা চারজনের মধ্যে দুজনকে পুলিশ আটক করে। তারা পুলিশকে জানায়, ঘটনার দিন সবাই অতিরিক্ত মদ খেয়েছিলেন।
আটকরা হলেন যাত্রাবাড়ীর ২০ বছরের কামরুল আলম ও ২১ বছরের আরিফ রহমান নিলু।
একই দিন হোটেল রয়েল টিউলিপ সীপাল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার একটি কক্ষে অবস্থান নেয়া যুবকের সঙ্গে থাকা মাফুয়া খানম নামে তরুণী বিকেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনা হয়। পরে চিকিৎসক ওই তরুণীকে মৃত ঘোষণা করেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই তরুণীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে স্বামী পরিচয় দেয়া নাছির উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রেমিক-প্রেমিকা বলে স্বীকার করেছেন।’
এদিকে বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে হোটেল সি গালে মনিরুল ইসলাম নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার সঙ্গে স্ত্রী পরিচয়ে উঠেছিলেন লিজা রহমান উর্মি নামে এক নারী। তাকেও হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মনিরুল ও লিজা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ৭২৪ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন। পরে রাতে মনিরুল অসুস্থবোধ করলে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনে ময়নাতদন্তের কথা জানিয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সেলিম উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিনজনের মৃত্যু নিয়ে রহস্য রয়েছে। তাই পুলিশ অধিকতর তদন্তের স্বার্থে এবং মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
‘এ ঘটনায় স্ত্রী ও স্বামী পরিচয়ে ওঠা দুজনসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো এজাহার দেয়া হলে সেটি তদন্ত করে মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে।’
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লাবণী অসুস্থ হওয়ার পর কোমায় চলে যান। এরপর তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত মদ খাওয়াতেই মেয়েটি অসুস্থ হয়েছিলেন বলে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধারণা করা হয়েছে।
‘বাকি দুজনের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ ছিল। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে স্পষ্ট হওয়া যাবে।’