পঞ্চগড়ের কারখানা মালিকদের ১৮ টাকা কেজি দরে কাঁচা চা পাতা কেনার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। চা পাতা মূল্য নির্ধারণ কমিটি এ দাম ঠিক করে।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বুধবার সন্ধ্যায় কাঁচা চা পাতা মূল্য নির্ধারণ কমিটির জরুরি সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম এ ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, চাষি ও বাগান মালিকরা ভেজা চা পাতা সরবরাহ করলে শতকরা ১০ ভাগ মূল্য কাটা হবে।
সভায় প্রথমেই পঞ্চগড়ে চা বিষয়ে একটি প্রতিবেদন মৌখিকভাবে উপস্থিত সবার উদ্দেশে তুলে ধরেন ড. শামিম আল মামুন।
ওই সময় কারখানার মালিকরা জানান, নিলাম বাজারে চায়ের দরপতন, গুনগত মানের চা পাতা সরবরাহ করতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়ছে তারা। চায়ের নিলাম বাজার যখন ভালো ছিল তখন ২৪ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে চা পাতা কিনেছেন তারা।
বর্তমানে নিলাম বাজারে সিলেটের চায়ের থেকে পঞ্চগড়ের চায়ের মান নিম্ন হয়েছে। ‘দুটি পাতা একটি কুড়ি’ এই নীতি না মেনে বাগান থেকে চা পাতা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে মানসম্পন্ন চা উৎপাদনে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা।
চা চাষিরা জানান, সরবরাহ করা চা পাতা নিলাম বাজারে না দিয়ে গোপনে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে বিক্রি হচ্ছে।
চা চাষিদের নেতা কামরুজ্জামান শেখ মিলন বলেন, ‘বুক ভরা আশা নিয়ে চা বাগান তৈরি করেছেন চা চাষি ও বাগান মালিকরা। বর্তমানে এক কেজি কাচা চা পাতায় উৎপাদন খরচ হয় প্রায় ১৫ টাকা, কিন্তু কারখানার মালিকরা চা পাতা কিনছেন মাত্র ১০ থেকে ১২ টাকায়। এভাবে চলতে থাকলে চা চাষে উৎসাহ হারাবে কৃষক।’
সভায় কারখানা মালিকদের কালোবাজারীর কথা উঠে আসলে সদর উপজেলা চেয়াম্যান আমিরুল ইসলাম একটি টাস্কফোর্স করার কথা জানান। পরে জেলা প্রশাসক একটি টাস্কফোর্স কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেন।
এর আগে ঈদের পর থেকে কাঁচা চা পাতার ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে পঞ্চগড়ের চা চাষিরা।
সভা শেষে জেলা প্রশাসক দুই পক্ষকে সভার সিদ্ধান্ত মানতে নির্দেশ দেন, তা না হলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানানো হয়।
সভায় পঞ্চগড় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীমতি জয়শ্রী রানী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুল হক, বাংলাদেশ চা বোর্ডের আঞ্চলিক শাখার ঊর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শামিম আল মামুন,স্মল টি গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল হক খোকন, পঞ্চগড়ের চা প্রক্রিয়াজাতকরন কারখানার মালিকগণ, চা চাষিসহ ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির কয়েকটি সংগঠনের নেতা এবং মূল্য নির্ধারণ কমিটির সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।