উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে পানি বাড়তে শুরু করেছে তিস্তায়। মঙ্গলবার রাত থেকে পানি বাড়তে শুরু করলেও বুধবার বেলা ১১টা পর্যন্ত বিপৎসীমার এক মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পাউবো।
এতে রংপুরে নদীতীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। নদীর ধারের অনেক বাদাম ও ভুট্টাক্ষেতে পানি উঠেছে বলে জানা গেছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে শিগগিরই নদী এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই মধ্যে গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের ইচলি, বিনবিনা, বাগেরহাট এবং লক্ষিটারী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করেছে। বাড়িঘর রক্ষায় ইচলির চরে স্বেচ্ছায় নির্মিত বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। এতে শঙ্কায় রাত কাটছে এলাকার লোকজনের।
বুধবার সকালে উপজেলার তিস্তার মহিপুর এলাকায় দেখা যায়, চারদিকে যতদূর চোখ যায় শুধু পানি। নদীর পাশের চরগুলোতে উঠেছে পানি।
এ সময় ইচলি চরের বাসিন্দা আব্দুর রহিম বলেন, ‘সোমবার রাতে পানি বেড়েছিল, কিন্তু পরদিন সকালে কিছুটা কমেছে। পরে মঙ্গলবার রাত থেকে পানি বেড়েছে। এলাকাবাসী মাটি ও বালা দিয়ে বাঁধ দিয়েছি, তবে পানির স্রোতে সেটি টিকবে না, ভেঙে যাবে।’
এলাকার মনছুর আলী বলেন, ‘এখনও ঘরে পানি ওঠেনি, তবে নদীর পাড়ের জমিগুলোতে পানি বেড়েছে। এভাবে পানি বাড়লে বেশিক্ষণ লাগবে না ঘরে পানি উঠতে।’
বাগেরহাট এলাকার বাসিন্দা হাফিজুর ইসলাম বলেন, ‘অন্যের জমিতে বাদামের আবাদ করেছিলাম, তাতে পানি উঠেছে। পানি না নামলে বাদাম লাল হয়ে যাবে। পানি আরও বাড়লে অপরিপক্ব বাদামই তুলে নিতে হবে।’
কোলকোন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ জানান, নদীতে পানি বাড়ছে। বিশেষ করে ইচলির বাঁধটি হুমকিতে আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এলাকাবাসীর অনেক ক্ষতি হবে।
লক্ষিটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়ছে, বাগেরহাট বিনবিনিয়া এলাকায়ও পানি বাড়ছে। আমরা সব সময় সতর্ক আছি।’
রংপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়ছে, তবে এখনও ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা দেয়নি। পানি বিপজ্জনক অবস্থার এক মিটার নিচে আছে। অর্থাৎ ৫১ দশমিক অবস্থায় আছে। ৫২ দশমিক হলে আমরা সেটি বিপৎসীমার ওপরে ধরি।’