মাদারীপুরে প্রকাশ্যে দুই ব্যবসায়ীকে কোপানোর একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
কোপানোর ঘটনাটি সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মাদারীপুরের লঞ্চঘাট এলাকায় ঘটে।
হামলায় আহতরা হলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের মহিষেরচর এলাকার অহিদ হাওলাদার ও একই এলাকার কামাল সরদার। তাদের বয়স যথাক্রমে ৩২ ও ৪৫ বছর।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে মাদারীপুর পৌর ছাত্রলীগের একাংশের সভাপতি নোবেল বেপারীসহ ২৫ জনকে আসামি করে মাদারীপুর সদর থানায় মামলা করেছেন আহত অহিদের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার সুমা।
মামলার বিবরণে বলা হয়, সোমবার বিকেলে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন অহিদ ও কামাল। ওই সময় নোবেলের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন।
আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে গুরুতর অবস্থায় আহত দুজনকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। অহিদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালে পাঠিয়েছে চিকিৎসকরা।
ভাইরাল হওয়া ২১ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, শহরের বটতলা এলাকার নোবেল বেপারী ও তার সঙ্গীরা এসে এ হামলা চালিয়েছে। হামলার সময় নোবেলের হাতে রামদা ছিল।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘তামিল সিনেমার স্টাইলে অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আসে সন্ত্রাসীবাহিনী। এসেই এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। এ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে শহর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে।’
আহত অহিদ হাওলাদারের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার সুমা বলেন, ‘নোবেল বেপারী মাদারীপুরের কিছু কিশোরদের নিয়ে একটি গ্যাং তৈরি করেছে। এই গ্যাংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন অপরাধ করে নোবেল।
‘প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে প্রতিনিয়ত অপকর্ম ঘটিয়ে যাচ্ছে। এ বাহিনীর বিভিন্ন সদস্যের নামে একাধিক মামলা রয়েছে।’
আহত কামাল সরদারের ভাই ইমরান সরদার বলেন, ‘শহরের বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত নোবেল বাহিনী। নেতাদের আশ্রয়ে থাকার কারণে সাধারণ মানুষ তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করতে পারে না।’
প্রশাসনের উদ্দেশে তার প্রশ্ন, ‘আমার ভাইকে কেন কোপালো? আমি সন্ত্রাসীদের বিচার চাই।’
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা আবু সফর হাওলাদার বলেন, ‘আহত দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কামালকে ভর্তি রাখা হয়েছে। এ ছাড়া অহিদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে। দুজনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের বেশ চিহ্ন রয়েছে।’
এদিকে ঘটনার পর থেকে উধাও নোবেলসহ তার গ্রুপের সদস্যরা। তার পৌর শহরের বাসায় গিয়েও সন্ধান মেলেনি। তার ব্যবহারিত মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘আমি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। জড়িতদের ধরতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।’