দেশের প্রথম বাজেট এয়ারলাইনস হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে এয়ার এশিয়া কনসাল্টিংকে পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে উড়ানের অপেক্ষায় থাকা বেসরকারি এয়ারলাইনস ফ্লাই ঢাকা।
এয়ার এশিয়া কনসাল্টিং মালয়েশিয়াভিত্তিক বিমানসংস্থা এয়ার এশিয়ার সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
সাধারণত এয়ার এশিয়া কনসাল্টিং এয়ারলাইনসগুলোকে কৌশল নির্ধারণ, বহর পরিকল্পনা, নেটওয়ার্ক কৌশল ঠিক করতে সহযোগিতা করে।
এয়ার এশিয়া কনসাল্টিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুবাশিনি সিলভাদাস বলেন, ‘কম খরচের এয়ারলাইনস হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে ফ্লাই ঢাকাকে একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করতে সহযোগিতা করবে এয়ার এশিয়া। এয়ার এশিয়া এবং ফ্লাই ঢাকা দুই প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্পের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে চায়।
‘একইসঙ্গে ফ্লাই ঢাকা এয়ার এশিয়ার নেটওয়ার্ক এবং হাব কাজে লাগিয়ে যাত্রীদের এই অঞ্চলের অন্যান্য গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার সুযোগও কাজে লাগাতে পারবে।’
ফ্লাই ঢাকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম ফজলে আকবর বলেন, ‘প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের সেরা কম খরচের এয়ারলাইনসের মর্যাদায় থাকা এয়ার এশিয়াকে সহযোগী হিসেবে পেয়ে আমরা রোমাঞ্চিত। এয়ার এশিয়ার পরামর্শ আমাদের সামনে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে বলে আমরা আশা করি এবং দেশের সেরা কম খরচের এয়ারলাইনস হিসেবে নিজেদের পরিচয় তৈরি করার আমাদের যে লক্ষ্য রয়েছে তা পূরণ হবে।
‘ফ্লাই ঢাকা গত বছরের অক্টোবরে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) পেয়েছে এবং এই মুহূর্তে এয়ার অপারেটরস সার্টিফিকেট (এওসি) পাওয়ার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এরই মধ্যে ফ্লাই ঢাকা অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে পরিচালনার জন্য উড়োজাহাজ সংগ্রহের ক্ষেত্রেও অনেকটা এগিয়েছে। এয়ার এশিয়ার অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে সম্ভবত আমরাই দেশে প্রথম এয়ারবাস এ থ্রিটুজিরো উড়োজাহাজ সফলভাবে অপারেট করতে যাচ্ছি।’
দেশে বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ছাড়া দুটো বেসরকারি এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এগুলো হলো- ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস ও নভো এয়ার। গত বছর ফ্লাই ঢাকা ও এয়ার অ্যাসট্রা নামে আরও দুটো বেসরকারি এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন চায়। দুটো এয়ারলাইনসকেই এরই মধ্যে অনুমতি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
দুই এয়ারলাইনস যাত্রা শুরু করলে দেশে বেসরকারি এয়ারলাইনসের সংখ্যা দাঁড়াবে চারে। এর ফলে এভিয়েশন খাতে অপারেটরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ফ্লাই ঢাকার মূল মালিকানায় রয়েছেন সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিনিয়োগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে।
আর এয়ার অ্যাসট্রার মালিকানায় রয়েছেন এক জাপান প্রবাসী ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের সদস্যরা।
ফ্লাই ঢাকা কম খরচের এয়ারলাইন হিসেবে নিজেদের কৌশল গোছাচ্ছে, এটি বাস্তবায়ন হলে তারাই হবে দেশের প্রথম বাজেট এয়ারলাইনস।
বেবিচকের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো এয়ারলাইনস ফ্লাইট শুরুর পর প্রথম এক বছর আবশ্যিকভাবে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক বছর পর আন্তর্জাতিক গন্তব্যে উড়ালের অনুমতি চাইতে পারে এয়ারলাইনস।
গত ২৫ বছরে দেশে ১০টি বেসরকারি এয়ারলাইনস যাত্রা শুরু করলেও এখন টিকে আছে মাত্র দুটি। এ সময়ের মধ্যে একে একে পাখা গুটিয়েছে অ্যারো বেঙ্গল, এয়ার পারাবত, রয়্যাল বেঙ্গল, এয়ার বাংলাদেশ, জিএমজি এয়ারলাইনস, বেস্ট এয়ার ও ইউনাইটেড এয়ার।
সর্বশেষ করোনার মধ্যে গত বছরের মার্চ থেকে ফ্লাইট বন্ধ রেখেছে আরেকটি এয়ারলাইনস রিজেন্ট এয়ার। কয়েক দফা চালুর কথা বললেও আর ফ্লাইটে ফেরেনি এয়ারলাইনসটি।
বন্ধ হয়ে যাওয়া এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে জিএমজি, রিজেন্ট ও ইউনাইটেড আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও চালাত।