সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের সঙ্গে কোনো সভায় উপস্থিত থেকে রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
সোমবার নবনির্বাচিত কমিটির একাংশের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
নির্বাচিত কোষাধ্যক্ষসহ বিএনপি সমর্থক সাত আইনজীবী এ সিদ্ধান্ত নেন।
সাত আইনজীবী হলেন মোহাম্মদ কামাল হোসেন, সহসম্পাদক মাহফুজ বিন ইউসুফ, সহসম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, কার্যকরী পরিষদের সদস্য মাহদীন চৌধুরী, গোলাম আকতার জাকির, মঞ্জুরুল আলম সুজন ও কামরুল ইসলাম।
জরুরি সভায় পাঁচটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সেগুলো হলো- ১. বিদায়ী ২০২১-২২ কমিটির সাতজন আওয়ামীপন্থি সদস্যের গত ১২ এপ্রিল তথাকথিত ১৫তম কার্যকরী কমিটির সভা এবং সে অবৈধ সভায় তথাকথিত নির্বাচন সাবকমিটি গঠন ও তাদের সব কার্যক্রম অবৈধ মর্মে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
২. যেহেতু পরাজিত প্রার্থী আব্দুন নুর দুলালকে অবৈধ পন্থায় সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং তিনি অবৈধভাবে সম্পাদকের পদ জবরদখল করেছেন, সেহেতু নিম্ন স্বাক্ষরকারীরা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
৩. যেহেতু আব্দুন নুর দুলাল অবৈধভাবে ঐহিত্যবাহী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের পদ জবরদখল করেছেন, তাই তার সঙ্গে কোনো সভায় উপস্থিত থেকে কোনো রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়।
৪. আব্দুন নূর দুলালকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করায় সভাপতির সঙ্গে কোষাধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে চেক বা ভাউচার পাস এবং হিসাব পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
৫. এসব সিদ্ধান্তের অনুলিপি প্রধান বিচারপতি, রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সমিতি সংশ্লিষ্ট সব ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি-আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
গত ১৫-১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২২-২০২৩ কার্যকরী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরে ১৭ মার্চ ভোট গণনা হয়। গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা নিয়ে শুরু হয় জটিলতা। বিএনপি প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস কাজলকে বিজয় ঘোষণার সময় আপত্তি দিয়ে ভোট গণনার দাবি তোলেন আওয়ামী লীগ থেকে সম্পাদক প্রার্থী আব্দুন নূর দুলাল।
একপর্যায়ে নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক ফল ঘোষণা না করেই পদত্যাগ করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয়। বারের সাবেক সভাপতিদের মধ্যস্থতায় সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিলেও তা সমাধান হয়নি।
পরে বিএনপির রুহুল কুদ্দুস কাজল নেম প্লেট লাগিয়ে চেয়ারে বসে পড়লে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে নূরের সমর্থকেরা। পরে তালা ভেঙে ভোট পুনর্গণনা করে আব্দুন নূর দুলালকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পরে তারা চেয়ারে বসে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
ভোট পুনর্গণনায় ১৪ পদের মধ্যে সভাপতি, সম্পাদকসহ সাতটিতে আওয়ামী লীগ এবং কোষাধ্যক্ষসহ সাতটিতে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা জয় পান।