বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাসপাতালের মেঝেতেই চলছে ডায়রিয়ার চিকিৎসা

  •    
  • ১৬ মে, ২০২২ ১৬:১৬

নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন অফিসের চিকিৎসক আশিষ কুমার সরকার বলেন, ‘ডায়রিয়া আক্রান্তদের প্যাকেটজাত স্যালাইন ও অন্যান্য তরল খাবার যেমন ডাবের পানি, চিঁড়ার পানি, ডালের পানি, ভাতের মাড়, চালের গুঁড়ার জাউ খাওয়ানো যেতে পারে।’

নওগাঁয় হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোয় বাড়ছে আক্রান্তদের সংখ্যা। ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় বেডের সংকট দেখা দিয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে রোগীরা হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আবহাওয়া পরিবর্তন ও অধিক উষ্ণতায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন চিসিৎকরা। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বেশি বলে জানান তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার প্রধান সরকারি নওগাঁ সদর হাসপাতালে ধারণক্ষমতার চেয়ে পাঁচ গুণেরও বেশি রোগী ভর্তি আছেন। বেড খালি না থাকায় অনেক রোগীকে বাধ্য হয়ে মেঝেতেই সেবা নিতে হচ্ছে। তুলনামূলক দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের রোগীরাই এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

নওগাঁ সদর হাসপাতাল থেকে জানা গেছে, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডে মোট ৮৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ২৪, মহিলা ওয়ার্ডে ২১ এবং পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ৪৮ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩৮ জন। তবে শিশু ও পুরুষ ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কৃর্তপক্ষ।

হাসপাতালে ভর্তি সদর উপজেলার শৈলগাছি গ্রামের বাসিন্দা বিরেন্দ্র চন্দ্র দাসের স্ত্রী বেনিতা রানি দাস জানান, হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তার স্বামীর ডায়রিয়া শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কয়েক দিন থেকে হাসপাতালেই আছেন তিনি। বেডে জায়গা না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা চলছে তার স্বামীর।

মহাদেবপুর উপজেলার উত্তর গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানান, শনিবার দুপুরের খাওয়ার পর থেকেই পাতলা পায়খানা ও বমি হচ্ছিল তার। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি হন। এখন কিছুটা সুস্থ আছেন।

শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি সাত বছরের শিশু আফিয়া খাতুনের বাবা আয়নাল হোসেন জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে তার মেয়ের বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। এরপর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করান মেয়েকে। কিন্তু অনেক রোগীর ভিড়ে হাসপাতালে বেড না পাওয়ায় মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ এখনও কোনো ডাক্তার আসেনি। শুধু দুটি স্যালাইন ও দুটি ইনজেকশন দেয়া হয়েছে।’

হাসপাতালের নার্স ইনচার্জ ফরহানা আক্তার বলেন, ‘দু-তিন দিন ধরে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। রোগীদের সামলাতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

হাসপাতালের চিকিৎসক মাকসুদুল হক রিপন বলেন, ‘হঠাৎ ডায়রিয়া আক্রান্তদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ আবহাওয়া পরিবর্তন ও অধিক উষ্ণতা। অতিরিক্ত গরমে শরীরে পানিশূন্যতা, খোলা ও বাসি খাবার খাওয়া ইত্যাদি কারণে ডায়রিয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

‘ডায়রিয়া থেকে রক্ষায় পানি ফুটিয়ে খাওয়া, রাস্তার পাশের খোলা খাবার ও শরবত এড়িয়ে চলাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি রোগীদের সাধ্যমতো সেবা দেয়ার। হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় বেড সংকট রয়েছে।’

নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন অফিসের চিকিৎসক আশিষ কুমার সরকার বলেন, ‘ডায়রিয়া হলে প্যাকেট স্যালাইন ও অন্যান্য তরল খাবার যেমন ডাবের পানি, চিঁড়ার পানি, ডালের পানি, ভাতের মাড়, চালের গুঁড়ার জাউ খাওয়ানো যেতে পারে।

‘এ ছাড়া ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুকে মায়ের দুধসহ অন্যান্য খাবার বারবার খেতে দিতে হবে। ডায়রিয়ার মাত্রা বেশি হলে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর