নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আলোর গতিতে দৌড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘দেশে জনগণের অবস্থা করুণ ও মর্মান্তিক। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আলোর গতিতে দৌড়াচ্ছে। গম আমদানি করা যাচ্ছে না, কারণ রপ্তানিকারক দেশ গম রপ্তানি বন্ধ করেছে।
‘চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এবং সয়াবিন তেল উধাও হয়ে যাওয়ার পর কয়েক দিনের মধ্যে আটা ক্রয় করা অসম্ভব হবে সাধারণ মানুষের জন্য। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে খাদ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী গতি থামছেই না। খাদ্যপণ্য নিয়ে সব ধরনের গভীর সংকটে বাংলাদেশ।’
তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা আরও সংকটাপন্ন। অর্থনৈতিক চরম দুর্দশাগ্রস্ত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষ নিরিবিলি কেঁদেও শান্তি পাবে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘উজানের পানি এবং বাঁধ ভেঙে বাংলাদেশের এক বিস্তৃত অঞ্চলের ধান তলিয়ে গেছে। কৃষককুল দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সারা জাতি আকুল উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করছে। বাংলাদেশে এক দুর্বিষহ সংকট প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নীলনকশা হিসেবে নতুন নতুন কালাকানুন তৈরিতে ব্যস্ত এই নিশিরাতের সরকার। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ও অন্য মাধ্যমের নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করছে। ২০১৮ সালেও জাতীয় নির্বাচনের মাত্র তিন মাস আগে তড়িঘড়ি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করা হয়।
‘এবারও আরেকটি নতুন কালাকানুন তৈরির যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা হবে আরও ভয়ংকর। বিরোধিতা দূরে থাক, জাতীয় জীবনকে নেতিয়ে পড়ার দিকে ঠেলে দেয়ার কৌশল হিসেবেই এই কালাকানুনগুলো তৈরি করা হচ্ছে।’
রিজভী বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখন অত্যাচারী আততায়ীর আঘাতে ছিন্নভিন্ন। নিজের আত্মসম্মানে জাগ্রত হয়ে জাতি সব সময় চিরসজাগ থেকেছে। আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধেও এ দেশের মানুষ নিজেদের জীবন-জীবিকা রক্ষার প্রয়োজনে রাজপথে ধেয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী সরকারের জন্য প্রলয়-দিন ঘনিয়ে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে বর্তমানে নিশিরাতের সরকার র্যাব-পুলিশ এবং আদালতের ভয় দেখিয়ে অঘোষিতভাবে একটি ভয়ংকর স্বৈরাচারী নীতি প্রণয়ন করেছে। সেটি হলো শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের কারো বিরুদ্ধে এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে কিছু লেখা যাবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।