বিভাগীয় তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় সত্যের জয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন টিটিই শফিকুল ইসলাম। একই সঙ্গে কারও প্রতি তার কোনো অভিযোগ নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নিউজবাংলার কাছে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় শফিকুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমার একটা আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি অন্যায় করিনি কিংবা কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপসও করিনি। আমার বিশ্বাস ছিল সত্যের জয় হবে, তা প্রমাণ হওয়ায় আল্লাহর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।’
রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করার অপরাধে গত ৫ মে ইমরুল কায়েস প্রান্ত, ওমর ও হাসানকে জরিমানা করেছিলেন টিটিই শফিকুল। এর মধ্যে প্রান্ত টিটিই শফিকুলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।
৫ মে রাতের এ ঘটনার পর ওই টিটিইকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, যা নিয়ে তৈরি হয় সমালোচনা।
প্রান্তর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ মে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে রেল বিভাগ। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। পরে সময় দুই দিন বাড়িয়ে ১৬ মে করা হয়।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। প্রতিবেদন গ্রহণ করেন পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহিদুল ইসলাম। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা (এটিও) সাজেদুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি ৪০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয়।ডিআরএম শাহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিবেদনে টিটিইকে সম্পূর্ণ নির্দোষ বলা হয়েছে। ওই ট্রেনের গার্ড শরিফুল ইসলাম বিনা টিকিটের যাত্রী ইমরুল কায়েস প্রান্তকে টিটিইর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে বাধ্য করেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় শফিকুল নিউজবাংলাকে আরও বলেন, ‘আমি সজ্ঞানে কারও সঙ্গে কখনও দুর্ব্যবহার করিনি। আমার বিরুদ্ধে মাদকাসক্তের অভিযোগ তোলা হয়েছে, আমি সাধারণত চা-ই পান করি না। সেখানে সিগারেট কিংবা মাদকের প্রশ্নই ওঠে না। কেন আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়েছে তা আমি জানি না।
‘তার পরও আমার কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। আমি যত দিন রেল বিভাগে চাকরি করব, তত দিন সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাব।’
সমালোচনার মুখে এর আগে ৮ মে শফিকুলকে দায়িত্ব ফিরিয়ে দেয়ার কথা জানান রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। ১০ মে কাজে যোগ দেন শফিকুল।
তবে তাকে বরখাস্ত করার দায় চাপানো হয় পাকশীর রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্য কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিনের ওপর।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে খবর আসে, রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আকতার মনির নির্দেশে শফিককে বরখাস্ত করা হয়। শাম্মীর মামাতো বোন ইয়াসমিন আক্তার নিপা বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। রেলমন্ত্রীও স্বীকার করেছেন, তার স্ত্রী টিটিই শফিকুলের বিরুদ্ধে টেলিফোন করে অভিযোগ দিয়েছিলেন।
এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে ৮ মে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তার ‘নবপরিণীতার’ বোঝার এখনও অনেক কিছু বাকি।