রাজধানীর দক্ষিণখান গার্লস স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী রিয়া আক্তারকে স্কুলের সামনে থেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তার খোঁজ মেলেনি। মামলা করার পরও মেয়ের সন্ধান না পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তার বাবা শফিকুল ইসলাম।
এদিকে পুলিশ বলছে, এটি অপহরণের ঘটনা নয়, প্রণয়।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে রোববার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলন করেন শফিকুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে রিয়ার বাবা শফিকুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে আমার মেয়ে স্কুলে যায়। কিন্তু স্কুল শেষের অনেক পরও বাসায় না ফেরায় স্কুলের সামনে গিয়ে জানতে পারি, বেশ কয়েকজন লোক আমার মেয়েকে স্কুলের সামনে থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় ১ মার্চ দক্ষিণখান থানায় মামলা করি। এতদিনেও আমার মেয়ের কোনো সন্ধান পাইনি। পুলিশও আমার মেয়েকে উদ্ধার করতে পারেনি।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘কাজী দুলালের ছেলে মো. সুজন মিয়া নামে স্থানীয় এক ভাড়াটিয়া বেশ কিছু দিন ধরে আমার মেয়েকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। আমার মেয়েকে অপহরণ করবে বলেও হুমকি দিয়ে আসছিল।
‘প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানতে পারি, সুজন সন্ত্রাসীদের নিয়ে আমার মেয়েকে স্কুলের সামনে থেকে অপহরণ করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। সুজনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ফোন করলে তার ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। যে বাসায় সুজন ভাড়া থাকে ওই ঘটনার পর থেকে সুজনও বাসায় ফেরেনি। সুজনের তিন সন্তানসহ স্ত্রী রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে মেয়েকে উদ্ধারের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে ভুক্তভোগী পরিবার। এ ছাড়া এই অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে পরিবারটি।
এদিকে প্রাথমিক তদন্তে এখন পর্যন্ত অপহরণের কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ পায়নি পুলিশ। তারা মনে করছে, প্রেমের সম্পর্কের কারণে ওই স্কুলছাত্রী ও সুজন স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে রয়েছেন।
এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মামুনুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামলার তদন্ত চলছে। সুজন কিংবা ওই স্কুলছাত্রী কারোর খোঁজ পাওয়া যায়নি। মেয়ের বাবা অভিযোগে যেমনটা বলেছেন আমরা কিন্তু তদন্তে তেমন কোনো ঘটনা পাইনি। আবার অপহরণ যদি হয়েই থাকে, তাহলে সুজন অন্তত তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করত। দুই মাস ধরে আমরা দুই পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের ফোন ট্র্যাক করছি। সুজন বা ওই স্কুলছাত্রী কেউই তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।’
তিনি বলেন, ‘সুজনের সঙ্গে ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল আমরা এমনটাও জানতে পেরেছি। তবে ঘটনা যা-ই হোক, আমরা ওই স্কুলছাত্রীকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে আন্তরিকতার সঙ্গেই তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। তবে কেউ যদি নিজে থেকে লুকিয়ে থাকে তাকে খুঁজে বের করা কঠিন কাজ। আমরা সেই চ্যালেঞ্জের মুখে আছি।’