বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেতুতে উঠতে লাগে মই

  •    
  • ১৫ মে, ২০২২ ১৬:৫৩

সরেজমিন দেখা যায়, হুড়কা ইউনিয়নের বেলাই, ভেকটমারী, গাজিখালী, কাঠামারী, নলবুনিয়া, গজগজিয়া, হুড়কা, চাড়াখালী-১, চাড়াখালী-২ ও ছিদামখালী গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সহজ মাধ্যম এই সেতু। এর একপাশের সংযোগ সড়কের কাজ প্রায় শেষ। কাজ চলছে অপর পাশের সংযোগ সড়ক নিয়ে। যে পাশের সংযোগ সড়কের কাজ চলছে, সেই পাশে বাঁশের মই বেয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন স্থানীয়রা।

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার হুড়কা ইউনিয়নের বগুড়া নদীর ওপর নির্মাণাধীন বগুড়া খেয়াঘাট সেতুর কাজ শেষ হয়নি চার বছরেও। বিকল্প পথ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নির্মাণাধীন ওই সেতু দিয়ে পারাপারে বাধ্য হচ্ছেন ১০ গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষ।

হুড়কা ইউনিয়ন থেকে রামপাল সদরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ এই সেতু জনসাধারণের জন্য দ্রুত খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

এলজিইডির অর্থায়নে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ শুরু হয় বগুড়া খেয়াঘাট সেতুর। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইটি অ্যান্ড জেই এই ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু করে। ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের ওই ব্রিজ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৯২ লাখ ৫১ হাজার ১৩৩ টাকা।

এরই মধ্যে ব্রিজের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে জনসাধারণের চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা বলা হলেও সেটি সম্ভব হয়নি। নতুন করে মেয়াদ বাড়িয়ে চলতি বছরের জুনে সেতুটি উদ্বোধন করা হবে বলে রামপাল উপজেলা এলজিইডির অফিসের এক কর্মকর্তা জানান। বর্তমানে সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ চলমান রয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, হুড়কা ইউনিয়নের বেলাই, ভেকটমারী, গাজিখালী, কাঠামারী, নলবুনিয়া, গজগজিয়া, হুড়কা, চাড়াখালী-১, চাড়াখালী-২ ও ছিদামখালী গ্রামের প্রায় সাত হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সহজ মাধ্যম এই সেতু। এর একপাশের সংযোগ সড়কের কাজ প্রায় শেষ। কাজ চলছে অপর পাশের সংযোগ সড়ক নিয়ে। যে পাশের সংযোগ সড়কের কাজ চলছে, সেই পাশে বাঁশের মই বেয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন স্থানীয়রা।

ভোগান্তিতে স্থানীয়রা

অমল দাস নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘কয়েক বছর ধইরে দেখতিছি এই ব্রিজটার কাজ হচ্ছে, কাজ কবে যে শেষ হবে তার তো ঠিকঠিকানা নেই। রামপাল সদর, মোংলা ও বাগেরহাট যাওয়ার জন্যই আমাগো এই নদী পার হয়ে যেতে হয়। এ ছাড়া আমাগো আর কোনো উপায় নেই, তাই বাধ্য হয়ে ব্রিজের ওই মই বেয়ে যাতি হয়। আমরাবা কী করব, আমাগো তো কোনো উপায় নেই।’

সুজন মজুমদার নামে আরেক স্থানীয় বলেন, ‘হুড়কা ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। তারা কৃষিকাজ, মৎস্য ও মোংলা ইপিজেডে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। বগুড়া নদী পার হয়ে তাদের শহরের যাতায়াত করতে হয়। এ ছাড়া যাতায়াতের বিকল্প যে পথটি রয়েছে, সেটি প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। তাই হাজারও মানুষের যাতায়াতের সহজ মাধ্যম এই ব্রিজটি মানুষের চলাচলের উন্মুক্তের দাবি জানাই।’

কী বলছেন সংশ্লিষ্টরা

হুড়কা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান তপন কুমার গোলদার বলেন, ‘২০১৮ সালের শেষ দিকে বগুড়া খেয়াঘাট ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথম দিকে ব্রিজের নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে চললেও একটা সময় করোনা মহামারি ও জমি অধিগ্রহণসংক্রান্ত মামলার কারণে ব্রিজের কাজ থেমে যায়।

‘মূল ব্রিজের নির্মাণকাজ শেষ হয় অনেক আগেই। সমস্যা হচ্ছে ব্রিজের এক অংশের সংযোগ সড়ক নিয়ে। সংযোগ সড়কটির কিছু অংশ ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থাকায় স্থানীয় বাসিন্দা খিরোজ দাস ও প্রতাপ রায় নামে দুই ব্যক্তি মামলা করেন। ওই মামলার কারণে ব্রিজের সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়।

‘আমিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ খিরোজ দাসকে ২ লাখ ও প্রতাপ রায়কে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেয়ার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করে গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজ জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।’

রামপাল উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী গোলজার হোসেন বলেন, ‘করোনা মহামারি ও সীমানা জটিলতায় মামলার কারণে বগুড়া খেয়াঘাট ব্রিজের কাজ দুই দফা পেছানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্রিজের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, এখন সংযোগ সড়কের কাজ চলছে। আশা করছি আগামী জুনে ব্রিজটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

‘পল্লী বিদ্যুৎতের লাইনসংক্রান্ত সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল, যেটি পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণের জন্য ইতোমধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া সীমানা জটিলতায় যারা মামলা করেছিলেন, তাদের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে।’

ব্রিজের উচ্চতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ব্রিজটি বগুড়া নদীর ওপর নির্মিত। এই নদী দিয়ে ছোট-বড় নানা ধরনের নৌযান চলাচল করে। বিষয়টি মাথায় রেখে ব্রিজটির উচ্চতা বেশি রাখা হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর