আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থতার দায় নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দিয়ে ভাসতে ভাসতে শ্রীলঙ্কায় পৌঁছেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে শনিবার রাজধানীর বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বক্তব্যে বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা নিজ দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির জন্য দেখার মতো একটা মিছিল পর্যন্ত করতে পারেনি, তাদের মুখে সরকার পতনের আন্দোলনের কথা মানায় না। তাদের দ্বারা যে আর কোনো আন্দোলন সম্ভব নয়, সেটা জনগণ বুঝে গেছে। তা ছাড়া তাদের নিজেদের মধ্যেও ঐক্য নেই।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আগে নিজ দলে ঐক্য ফিরিয়ে আনুন। আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থতার দায়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দিয়ে ভাসতে ভাসতে এখন শ্রীলঙ্কা দ্বীপে পৌঁছেছে।
‘বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে না। কেন না এ দেশ ঋণগ্রস্ত নয়, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকেও ঋণ দিয়েছে।’
বাংলাদেশের অবস্থা অচিরেই শ্রীলঙ্কার মতো হবে বলে শুক্রবার মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল।
নিজ জেলা ঠাকুরগাঁও সদরে ফখরুল আরও বলেন, সরকার যেভাবে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে, তাতে শ্রীলঙ্কার মতো হতে বাধ্য বাংলাদেশ।
ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা বলেন, ‘বিরোধী দল আজকে এগিয়ে যাওয়ার পথে কালো ছায়া সংকটে পড়েছে শেখ হাসিনার অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার কারণে। তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণেই বিরোধী দল এগিয়ে যেতে পারছে না।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন অর্জনে বিশ্বের বিস্ময়। প্রতিটি সংকট ও দুর্যোগে দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা সফলতা অর্জন করেছেন।’
আওয়ামী লীগ থেকে দূষিত রক্ত বের করে বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করার আহ্বান জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি সম্মেলনে উপস্থিত শীর্ষ নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভালো লোকদের দলে টানুন আর খারাপদের দল থেকে বের করে দিন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগে কেউ অপকর্ম করলে রেহাই পায় না, শাস্তি পেতে হয়। বিএনপির আমলে এমন একটাও নজির নেই যে, তারা শাস্তি দিয়েছে।’
বক্তব্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের প্রসঙ্গ টেনে কাদের বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত না থাকলে হত্যাকারীরা এ দুঃসাহস দেখাতে পারত না। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন বলেই খুনিদের নিরাপদে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন এবং ইনডেমনিটি দিয়ে তাদের বিচারের পথ রুদ্ধ করেছিলেন।
‘মুক্তিযুদ্ধের উজ্জীবিত স্লোগান জয় বাংলা, সাত মার্চ নির্বাসনে পাঠিয়েছিলেন। তারপর একে একে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, চেতনা নিষিদ্ধ হয়ে গেল। পাকিস্তানের অনুকরণে বাংলাদেশকে তারা আবারও সাম্প্রদায়িকতার পথে নিয়ে যায়।’
ঐতিহাসিক নোমানি ময়দানে মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ ফ ম আবদুল ফাত্তাহর সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।