সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিন ছাত্রকে দিয়ে আরেক ছাত্রকে রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি, তিনি এ ঘটনায় জড়িত না।পুলিশ বলছে, অভিযোগে পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা আইএইচটি অ্যান্ড ম্যাটস ইন্সটিটিউটে হোস্টেলের ৩১৩ নম্বর কক্ষে শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
রাতেই আহত শিক্ষার্থীকে দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নলতা আইএইচটি অ্যান্ড ম্যাটস ইন্সটিটিউটের পরিচালক জিএম ফারুকজ্জামান এক শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আহত শিক্ষার্থী পটুয়াখালীর বাউফলের সোলায়মান হোসেন আইএইচটির তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। নলতা আইএইচটি অ্যান্ড ম্যাটস ইন্সটিটিউট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তিনি।তার সহপাঠী রিপন বলেন, ‘রেডিওলজি বিভাগের শিক্ষক সাইদ হাসানের নির্দেশে রাত ১০টার দিকে সোলায়মানকে ডেকে নিয়ে যায় নাহিদ, রশিদ ও রানা। তাদের মধ্যে নাহিদ ও রশিদ আইএইচটির ছাত্র এবং রানা ম্যাটসের ছাত্র।
‘৩১৩ নম্বর রুমে নিয়ে রড দিয়ে পিটিয়ে সোলায়মানের মাথায় আঘাত করা হয়। পরে আমরা উদ্ধার করে সখিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছি।’
এ ব্যাপারে সোলায়মান বলেন, ‘শিক্ষক সাইদ হাসান আমার কাছে কিছু টাকা চেয়েছিলেন। আমি দিতে রাজি না হওয়ায় আমার ওপর এই নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্যাতনকারীরা জামায়াত-শিবিরের সমর্থক।’
অভিযোগের বিষয়ে রেডিওলজি বিভাগের শিক্ষক সাইদ হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থী সোলাইমানের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় আমি জড়িত না। আমার শরীর খারাপ থাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে চলে যাই। এরপর কী হয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে, সকালে আমি জানতে পেরেছি সোলাইমানকে নির্যাতন করেছেন সেখানকার অন্য ছাত্ররা।’
সেখানকার শিক্ষার্থীরা প্রায়ই নিজেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে থাকেন বলে দাবি করেন তিনি।
শনিবার বেলা ১১ টার দিকে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে দেখতে যান সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা আ ফ ম রুহুল হক।
নলতা আইএইচটি অ্যান্ড ম্যাটস ইন্সটিটিউটের পরিচালক জিএম ফারুকজ্জামান বলেন, ‘আহত শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গেল কয়েকদিনে হোস্টেলগুলোতে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। সেগুলো আমরা মীমাংসা করে দিয়েছি।
‘তবে এটা একটু বাড়াবাড়ি হয়েছে। ঘটনায় কমিটি করে দেখা হবে এত বড় ঘটনা কেনো ঘটল। এটা একাডেমিক প্রতিষ্ঠান। এখানে আইনি ব্যবস্থা আসে না। উভয়ই আমার ছাত্র। এখন নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী বা তার পরিবার যদি আইনি ব্যবস্থা নিতে চায়, তবে তা নিতে পারেন।’
দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রায়হান আবীর বলেন, ‘সালমানের মাথা, হাত, পা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টা পার না হলে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি নিয়ে কিছু বলা যাবে না।’
কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কেউ এখনও থানায় অভিযোগ করেন নি। অভিযোগ পেলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’