কুড়িগ্রামে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই। সোনালি ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ঠিক এমন সময় বৃষ্টির বাগড়ায় ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
কুড়িগ্রাম আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য অনুযায়ী, গত ৪৮ ঘণ্টায় জেলায় ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এতে নিম্নাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে পাকা ধান এবং খড় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকেই ধানগাছ কাটলেও মাড়াই করতে পারছেন না। ফলন ভালো হলেও এমন পরিস্থিতিতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
কৃষি বিভাগ বলছে, ধান কাটা ও মাড়াইয়ে কৃষক সাময়িক সমস্যায় পড়লেও বৃষ্টির কারণে তেমন ক্ষতি হয়নি। কারণ জেলার ৭০ ভাগ ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়ে গেছে।
সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের কালে গ্রামের কৃষক সফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২ বিঘা জমিতে বোরোর আবাদ করছি। ধান পেকে গেছে, ফলনও ভালো হইছে। কিন্তু শুক্রবার বৃষ্টিতে পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। কামলা নিয়ে ডুবে যাওয়া ধান কাটছি। না কাটলে পচে যাবে।’
যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুরের কৃষক মকবুল হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে আগাম ধান কাটছি। কিন্তু দুই দিনের বৃষ্টিতে মাড়াই করা ধান শুকাইতে পারতেছি না। খড়গুলো স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে।’
দুই দিনের বৃষ্টিতে ধান ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্যান্য ফসলও। রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তৈয়বখা গ্রামের কৃষক হক্কানী ব্যাপারী বলেন, ‘ছয় একর জমিতে বাদাম, পেঁয়াজ, কুমড়া, কালিজিরা, ধনিয়া করেছি। বৃষ্টিতে সব শেষ। ধার-দেনা করে ফসল করেছি। এখন দুশ্চিন্তায় আছি, কীভাবে দেনা পরিশোধ করব?’
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সবুর মিয়া বলেন, ‘গত ৪৮ ঘণ্টায় জেলায় ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা বা রোববার থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুই দিনের বৃষ্টিপাতে বোরো চাষিরা ধান কাটা, মাড়াই এবং শুকাতে কিছুটা সমস্যার মুখে পড়েছেন ঠিকই। তবে ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে আবাদে তেমন ক্ষতি হয়নি।’