পাবনার বেড়া উপজেলায় ঘরে স্ত্রী-সন্তান রেখে প্রেমের টানে নিজ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে নিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক হাসমত হোসেনের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত শিক্ষক হাসমত হোসেন উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের বাটিয়াখড়া গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে এবং ভারেঙ্গা অ্যাকাডেমি নামে একটি স্কুলের সহকারী শিক্ষক।
শুক্রবার ভারেঙ্গা অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষক মাহফুজার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারেঙ্গা অ্যাকাডেমির সহকারী শিক্ষক হাসমত হোসেনের কাছে প্রাইভেট পড়ত ওই প্রতিষ্ঠানেরই দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মায়া খাতুন। ১৫ বছরের এই কিশোরী পার্শ্ববর্তী কুশিয়ারা গ্রামের রফিকুল ইসলামের কন্যা।
প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে মায়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন শিক্ষক হাসমত। যদিও ৭ বছর আগে বাটিয়াখড়া গ্রামের মৃত হিরা মিয়ার কন্যা খাদিজাকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। তার দুটি ছেলেসন্তানও রয়েছে।
স্ত্রী-সন্তান থাকার পরও গত ৯ মে মায়াকে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যান হাসমত হোসেন।
মায়ার পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার দিন স্কুল ছুটির পরও কন্যা বাড়ি ফিরে না গেলে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। কিন্তু টানা দুই দিন খুঁজেও তার কোনো সন্ধ্যান মেলেনি। পরে সহপাঠীদের কাছে খোঁজ নিলে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শিক্ষক হাসমতকে ফোন করেন মায়ার বাবা। হাসমত তখন মায়াকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন এবং তিনি মায়াকে বিয়ে করেছেন বলে জানান। এ কথা শোনার পরই গত ১১ মে বেড়া মডেল থানায় হাসমতের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন মায়ার বাবা রফিকুল ইসলাম।
ছাত্রীর বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাসমতকে আমি অনেক বিশ্বাস করতাম। তার কাছে আমার মেয়ে প্রাইভেট পড়ত। কিন্তু সে যে এত বড় খারাপ, তা আমি জানতাম না। এ ঘটনায় আমার স্ত্রী ও আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।’
ভারেঙ্গা অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষক মাহফুজার রহমান বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর ধরে হাসমত এই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। আগে কখনও এমন আচরণ ওর মাঝে দেখিনি। আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি যে, হাসমত নিজ সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীকে নিয়ে পালিয়েছেন। বিষয়টি জানার পর আমি থানা পুলিশ ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তার বিরুদ্ধে শিগগির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বেড়া মডেল থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘আমাদের কাছে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন মেয়ের বাবা। আমি তৎক্ষণাৎ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।