বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘কেমিক্যালে পাকানো’ সাতক্ষীরার আম যাচ্ছে রাজধানীতে

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ১৩ মে, ২০২২ ২২:০২

সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. কল্যাণশীষ জানান, যেসব অপুষ্ট আম কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো হচ্ছে তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কিডনি, লিভার, পাকস্থলীর ক্ষতিসহ ক্যানসারের জীবাণুও বহন করে এসব কেমিক্যাল।

মধু মাস জ্যৈষ্ঠ আসার অগেই সাতক্ষীরার বাজারে উঠতে শুরু করেছে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাইসহ সুস্বাদু বিভিন্ন জাতের আম।

আবহাওয়া আর মাটির গুণে দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় সাতক্ষীরার আম আগেভাগেই পাকে। তবে এবার ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’ আসছে এমন খবরে আতঙ্কিত চাষিরা গাছ থেকে সময়ের আগেই আম পেড়ে বাজারে নিয়ে আসছেন। ফলে অপুষ্ট আমে এখন সয়লাব সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজার।

অভিযোগ উঠেছে, অপরিপক্ব এসব আম ক্ষতিকর কেমিক্যাল দিয়ে পাকিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে।

সাতক্ষীরার কুখরালী গ্রামের আমচাষি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘১৮ বিঘা জমিতে এ বছর আম চাষ করেছি। এবার গাছে মুকুল আসার আগে থেকেই বৈরী আবহাওয়ার কারণে আম উৎপাদন কম হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আসানির আঘাত হানার খবরে আতঙ্কিত হয়ে চাষিদের অনেকেই অপরিপক্ব আম আগেভাগে ভেঙে ফেলেছেন।’

তিনি জানান, সাতক্ষীরায় গত বছর যে আম প্রতি মণ ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেই আম এবার ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে আমচাষিরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় ৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। আর ৫০-৬০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের ঘোষণা অনুযায়ী, চলতি মাসের ৫ তারিখ গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগ আম পাড়া শুরু হয়েছে। আগামী ১৬ মে থেকে হিমসাগর এবং মে মাসের শেষে ল্যাংড়া আম পাড়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আসানির কারণে আমচাষিরা বাগান থেকে আগেভাগেই হিমসাগর ও ল্যাংড়া আম পাড়ছেন বলে জানা গেছে।

সুলতানপুর বড়বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম বাবু জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ বছর আমের ফলন বিগত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক কম। তার ওপর ঘূর্ণিঝড় আসানির কারণে আগাম আম ভেঙে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এ অবস্থায় অপুষ্ট আম নানা কেমিক্যাল দিয়ে পাকিয়ে বাজারে আনা হচ্ছে। এসব আমের বেশির ভাগই যাচ্ছে রাজধানীতে।

আব্দুর রহিম দাবি করেন, প্রশাসনিক তৎপরতা থাকার পরও আমে কেমিক্যাল দেয়া থামানো যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘বাজারে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, ক্ষীরসরাই, বৈশাখীসহ নানা জাতের আমে ভরে গেছে। গ্রামাঞ্চল থেকে ভ্যান ও বিভিন্ন পরিবহনে শহরের সুলতানপুর বড়বাজারের আড়তগুলোয় এসব আম আসছে।’

সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. কল্যাণশীষ জানান, যেসব অপুষ্ট আম কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো হচ্ছে তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কিডনি, লিভার, পাকস্থলীর ক্ষতিসহ ক্যানসারের জীবাণুও বহন করে এসব কেমিক্যাল। তাই ফল খাওয়ার আগে মানুষকে সচেতন হতে হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ বছর আমের ফলন কিছুটা কম। আমের যে রং হওয়ার কথা তা হয়নি। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় আসার খবরে আমচাষিরা আতঙ্কিত হয়ে তাড়াহুড়া করে আম পেড়ে ফেলেছেন। হঠাৎ বাজারে আমের চাপ বাড়ায় আমের দামও কমে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর আমরা এক হাজার বাগান নির্ধারণ করেছি। ওই বাগানগুলো থেকে বাছাই করে বিদেশে আম পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।’

এদিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, কেমিক্যালযুক্ত অপুষ্ট আম যাতে বাজারে না ওঠে সে জন্য প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।

এ বিভাগের আরো খবর