চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে নজরুল ইসলাম হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। তাদের মতে, বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের জের ধরে নজরুল ইসলামকে তার স্ত্রী ও স্ত্রীর প্রেমিক শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বাড়ির কাছাকাছি একটি রাস্তার পাশে ফেলে রাখেন।
এর আগে গত বুধবার গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর আড্ডা আঞ্চলিক সড়কের নজরপুর এলাকা থেকে নজরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করে গোমস্তাপুর থানার ওসি দিলিপ কুমার দাস জানান, উদ্ধারের পর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। কানের কাছে একটু রক্ত দেখা যায়। তবে তার পরনের শার্ট গলার কাছে প্যাঁচানো ছিল। সেই সঙ্গে গলায় একটি প্লাস্টিকের দড়িও প্যাঁচানো অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে গলায় কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকায় ওই দড়ির সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু হয়।
দিলিপ কুমার বলেন, ‘নিহত নজরুলের তৃতীয় স্ত্রী লালবানুর বাড়িতে গলায় পেঁচিয়ে থাকা দড়ির মতোই একটি দড়ি পাওয়া যায়। অর্ধেকটা দড়ি সেখানে ছিল। এরপর লালবানুসহ তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।’
ওসি জানান, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে লালবানু ঘটনার সবকিছু স্বীকার করেছেন। গোপন প্রেমিকের পরিকল্পনায় এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলেও পুলিশকে জানান তিনি।
স্বীকারোক্তির বরাতে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ওসি জানান, লালবানুর বাড়িতে চায়ের দোকান ছিল। সেই দোকানে চা খেতে আসতেন পাশের ইটভাটার ম্যানেজার মোহাম্মদ শাকির। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত মার্চে এনায়েনপুর বাজার থেকে নিজ নামে কেনা একটি সিমসহ মোবাইল ফোন লালবানুকে উপহার দেন শাকির। ওই ফোন দিয়েই তারা নিয়মিত কথা বলতেন।
বিষয়টি টের পেয়ে স্ত্রীকে মারধর করেছিলেন নজরুল ইসলাম। এ ছাড়া ইটভাটার ম্যানেজার শাকিরকেও সাবধান করেন তিনি। এর পর থেকেই নজরুলকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করতে থাকেন শাকির।
ওসি বলেন, ‘লালবানু স্বীকার করেছেন, সেদিন রাতে স্বামী নজরুল ইসলাম ঘুমিয়ে পড়লে তাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেন তারা দুজন। শাকির বালিশের কাঁথা দিয়ে নজরুলের গলা চেপে ধরেন। আর পা চেপে ধরেন লালবানু। এভাবেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নজরুল। এরপর ঘটনার মোড় অন্যদিকে নিয়ে যেতে বাড়ির কাছেই রাস্তার পাশে তার মরদেহটি ফেলে আসেন লালবানু ও শাকির।’
এ ঘটনায় ইটভাটার ম্যানেজার মোহাম্মদ শাকিরকে বৃহস্পতিবার রাতে তার ইটভাটা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।