কেন পদত্যাগ করব- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গোটা দেশের মানুষ জানে আওয়ামী লীগের কেন পদত্যাগ করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘তাদের সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, লুটপাট, টাকা পাচার, অর্থনৈতিক অবস্থা ধ্বংস করে দেয়াসহ সব মিলিয়ে তাদের পদত্যাগ করা উচিত।’
শুক্রবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর খাগড়াবাড়ি বাসুদেবপুর এলাকায় এক আয়োজনে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ফখরুল।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের সময় সহিংসতায় নিহত বিএনপি নেতা-কর্মীদের পরিবারের খোঁজখবর নিতে সেখানে যান এই বিএনপি নেতা। তিনি পরিবারের সদস্যদের মাঝে আর্থিক সহায়তাও দেন।
বিএনপি এক দশক ধরেই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে। তারা নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে তাদের অধীনে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি করছে।
বুধবার ফরিদপুর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলে, ‘কেন পদত্যাগ করব? গত ১৩ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। জনগণ মনে করে আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থতার দায়ে, বিএনপি নেতাদের টপ টু বটম পদত্যাগ করা উচিত।’
- আরও পড়ুন: কেন পদত্যাগ করব: কাদের
সেই সম্মেলনে কাদেরের রাখা অন্য একটি বক্তব্যের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান ফখরুল। যারা আওয়ামী লীগ করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে, তাদেরকে জেলা কমিটিতে না রাখার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগ নেতা।
কাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘তিনি স্বীকার করেছেন তার দলের লোকেরা বাংলাদেশকে লুট করেছেন, দুর্নীতি করেছেন। যার কারণে আওয়ামী লীগের সম্মেলন কমিটিতে যেন তারা না আসতে পারেন সে কথা বলেছেন।’
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হতে বাধ্য বলেও মনে করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার মতো একই রকমভাবে এখানকার অর্থনীতির অবস্থা ভাঙছে। ঋণের বোঝা এত বেশি যে পারসন প্রতি তা দাঁড়িয়েছে ৪৭২ ডলার।’
সরকারে মদতে ব্যবসায়ীরা দ্রব্যমূল্য বাড়িয়েছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেও একজন ব্যবসায়ী। তার এ দেশের ব্যবসায়ীদের চরিত্র সম্পর্কে জানা উচিত ছিল। মূলত তারাই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটদের সুযোগ করে দিয়েছেন। যার ফলে বাজারে আজ এত মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ বল প্রয়োগ করে নির্বাচনি ব্যবস্থাকে নিজেদের মতো করে নিতে চায় বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘এভাবে তারা ক্ষমতায় যেতে চায়। আমরা বারবার বলে আসছি এ দেশে নির্বাচন হতে হবে জনগণের ভোটের মধ্য দিয়ে।
‘নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন না হলে জনগণ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না। তাই আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, এই সরকারকে পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।’
ঠাকুরগাঁও বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনসহ বিএনপির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।