তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বপ্ন না দেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বিএনপিকে পরামর্শ দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে শুক্রবার দুপুরে কীটতত্ত্ব সমিতির ১১তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেয়ার আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান মেনে বর্তমান সরকারের মেয়াদে নির্বাচন কমিশনের অধীনে হবে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বপ্ন না দেখে বিএনপিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সব গণতান্ত্রিক দেশে, ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কন্টিনেন্টাল ইউরোপ, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র- সেখানে কোথাও চলতি সরকার পদত্যাগ করে আরেকটি সরকার আসে না। সেভাবেই বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনায় থাকতেই নির্বাচন হবে।’
আন্দোলনের নামে দেশে বিশৃঙ্খলার কোনো চেষ্টা করলে তা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল, পারেনি। গণতন্ত্রের অভিযাত্রা অব্যাহত ছিল। ২০১৮ সালেও বিএনপি এ ধরনের কথা বলেও নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনি ট্রেনের পাদানিতে চড়ে নির্বাচনে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল এবং সব দলের জোট করে নির্বাচন করেছে। এর ফলাফল মাত্র পাঁচটি আসন, খালি কলসি বাজে বেশি। সুতরাং তাদের বলব, অনর্থক বাগাড়ম্বর না করে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিন।’
বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকার পতনের আন্দোলনের কথা আমরা ১৩ বছর ধরেই শুনে আসছি।
‘যে দলের নেতারা মির্জা আব্বাসসহ পুরুষ হয়েও নারীর বেশে বোরকা পরে আদালতে জামিনের জন্য হাজির হন, যাদের ওপর তাদের নেতাকর্মীদের আস্থা নেই, তারা কতটুকু কী করতে পারবেন। তাদের শক্তি, সামর্থ্য, হিম্মত আমরা জানি, জনগণও জানে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলনের নামে তারা (বিএনপি) যদি বিশৃঙ্খলা, জ্বালাও-পোড়াও বা আগে যেভাবে মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব করেছে, সেটি করার অপচেষ্টা করে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।’
বিএনপি সভা-সমাবেশের অনুমতি পাচ্ছে না বলে যে অভিযোগ করছে, তাও খণ্ডন করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘তারা অনেক সময়ই সভা-সমাবেশের অনুমতি নেয় না। আর সভা-সমাবেশে তারা নিজেদের মধ্যেই মারামারি-ভাঙচুর করে। এতে জনগণ আতঙ্কিত হয়, আর জনগণ আতঙ্কিত হলে সরকার তো বসে থাকতে পারে না।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের পর সম্মেলনে যোগ দেন হাছান মাহমুদ। কৃষিজমি রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। বলেন, ‘অপরিকল্পিত নগরায়ণ, যত্রতত্র ইমারত নির্মাণের ফলে যেন কৃষিজমি নষ্ট না হয়। কৃষিক্ষেত্রে গবেষণা আমাদের শস্য উৎপাদনকে বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে। উন্নয়নের পথে এই ধারা অব্যাহত থাকা আবশ্যক।’