বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এয়ার টিকিট বিক্রির প্রতারক চক্র, হোতা গ্রেপ্তার

  •    
  • ১২ মে, ২০২২ ২০:১৪

প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট বিক্রি করে পরবর্তীতে যাত্রীর অগোচরে টিকিট রিফান্ড করে অর্থ হাতিয়ে উধাও হয়ে যেত। ওদের প্রধান টার্গেট ছিল সামনের হজ মৌসুম।

ভুয়া ট্রাভেল এজেন্সি খুলে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট বিক্রি করে পরবর্তীতে যাত্রীর অগোচরে টিকিট রিফান্ড করে অর্থ হাতিয়ে উধাও হয়ে যেত একদল প্রতারক। পরে ওই যাত্রী বিমানবন্দরে গিয়ে জানতে পারতেন তার টিকিট বাতিল করা হয়েছে। তখন হাপিত্যেশ করা ছাড়া আর কিছু করার থাকত না যাত্রীর।

এয়ারলাইন্সের টিকিটে বিক্রির নামে মানুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতানো এই প্রতারক চক্রের মূল টার্গেট ছিল সামনের হজ মৌসুম।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের গুলশান বিভাগের একটি টিম অভিযান চালিয়ে এয়ারলাইন্সের টিকিট বিক্রির জালিয়াত চক্রের একজনকে আটক করেছে। মাহবুব উর রশিদ নামের এই প্রতারককে বুধবার রাজধানীর গ্রীনরোড এলাকা থেকে আটক করা হয়।

গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে বিভিন্ন এয়ালাইন্সের ৮১টি ভুয়া টিকিট, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন, দুটি কম্পিউটার, কালো রঙের একটি হাড জিপ গাড়ি, ১২টি বিভিন্ন ব্যাংকের চেক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একটি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।

রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, গত ২৬ মার্চ সাইদুর রহমান নামে এক ভুক্তভোগীর সঙ্গে প্রতারক মাহবুব উর রশিদের পরিচয় হয়। তিনি নিজেকে এমকিউ ট্রেড অ্যান্ড ট্রাভেল কনসালটেন্সি নামের এক প্রতিষ্ঠানের সিইও বলে দাবি করেন এবং বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট কিনে যাত্রীদের বিদেশে পাঠান।

সাইদুর রহমান তাকে জানান, তার পরিচিত পাঁচজনের মাস্কট, রিয়াদ ও টরন্টোর বিমানের টিকিট লাগবে। পাঁচজনের টিকিট বাবদ মাহবুবকে তিনি ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা দেন। প্রাথমিকভাবে তাকে মাস্কট ও রিয়াদের দুটি টিকিট দেয়া হয়।

কিন্তু রিয়াদগামী যাত্রী গত ২৮ মার্চ বিমানবন্দরে গিয়ে দেখেন তার টিকিট ইনভ্যালিড (বাতিল) হয়ে গেছে। টিকিটিং এজেন্সি টিকিট বাতিল করে টাকা উঠিয়ে নিয়ে গেছেন।

সাইদুর এ বিষয়ে মাহবুবের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পরবর্তীতে আবার দুটি টিকিট ইস্যু করে দিলেও ফ্লাইটের দিন তিনি জানতে পারেন এই টিকিট দুটিও রিফান্ডেড।

পরবর্তীতে টরন্টোর টিকিট ইস্যু না করেই মাহবুবুর উর রশিদ অফিস গুটিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাইদুর রহমানসহ আরো একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে এবং অন্যান্য প্রতারণার সংবাদে ডিবি গুলশান তদন্ত শুরু করে।

তদন্তে জানা যায়, প্রতারক মাহবুব উপর রশিদ বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও পেজ খুলে বিভিন্ন দেশে গমনাগমন, ওমরা হজ পালন, সিঙ্গেল টিকিট, আপ-ডাউন টিকিট, পরিবারের সদস্যদের বিমানের

টিকিট বিক্রির বিজ্ঞাপন দিতেন। কোনো বিদেশগামী যাত্রীর টিকিটের প্রয়োজন হলে বা কোনো কাস্টমার রাজি থাকলে তার কাছ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে যাত্রীর পাসপোর্টের ছবি নিতেন।

ওদিকে দুবাইয়ে অবস্থান করা বাংলাদেশি নাগরিক সাদ দুবাই থেকে ও পাকিস্তানের করাচির আল-গাফফার ট্রাভেলস, আনোয়ার সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড, জে এ এস ট্রাভেলস; ভাওয়ালপুর এলাকার ফ্লাই-লিংক ট্রাভেলস ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করে মাহবুবকে হোয়াটসঅ্যাপে অথবা মেইলে পাঠাতেন।

ডিবি প্রধান বলেন, ক্লায়েন্ট সংগ্রহ, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয়, প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া টাকা বিলিবণ্টনের কাজটি করতেন মাহবুবের সহযোগী জাহাঙ্গীর।

মাহবুবের বিরুদ্ধে রাজধানীর ভাটারা, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় ৬টি মামলা রয়েছে। পুরনো আরো ৩টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

ডিবি জানায়, ২০১৫ সালে কানাডায় লোক পাঠানোর কথা বলে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের ঘটনায় মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডি থানায় মাহবুবের বিরুদ্ধে দুটি মানব পাচারের মামলা হয়। এ সময় তার প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল প্লানেট ওভারসিজ। তিনি প্রতারণার সুবিধার্থে তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে অফিস পরিবর্তন করেন। ২০১৫ সালে মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়ায়, ২০১৮ সালে কারওয়ার বাজারে, ২০২১ সালে এলিফ্যান্ট রোডে এবং সবশেষে বসুন্ধরা এলাকায় তিনি অফিস ভাড়া নিয়ে প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর