বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অঙ্কন ‘হত্যাকারীদের’ সর্বোচ্চ শাস্তি চান শিক্ষার্থীরা

  •    
  • ১২ মে, ২০২২ ১৯:৩১

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অঙ্কনের মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। এই মৃত্যুর পেছনে অনেক রহস্য উন্মোচন হোক, এতটুকুই চাওয়া সবার। অঙ্কনকে বাঁচাতে সবাই যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন, আশা রাখি সবাই এই মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে এক হয়ে আওয়াজ তুলবেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অনার্স চূড়ান্ত পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন অঙ্কন বিশ্বাস। এ ছাড়া তিনি ভালো বিতার্কিক ছিলেন।

আন্তব্যাচ, আন্তবিভাগ, আন্তবিশ্ববিদ্যালয়সহ জাতীয় টেলিভিশন বিতর্কে একাধিকবার অংশ নিয়ে সফলতা পেয়েছেন। এ ছাড়া নাচ, গান সবকিছুতেই ছিল সমান অংশগ্রহণ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধনে এসব কথা বলেন শিক্ষার্থীরা।

তাদের মতে, অঙ্কন কখনই আত্মহত্যা করতে পারে না, তাকে হত্যা করা হয়েছে।

জবির ইংরেজি বিভাগে মাস্টার্সের প্রথম সেমিস্টারে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী অঙ্কনের মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা, ডিবেটিং সোসাইটি ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

ইংরেজি বিভাগসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধন করেন।

প্ল্যাকার্ডে জাসটিস ফর অঙ্কন, দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে, স্ট্যান্ড ফর অঙ্কন, কেন অকালে ঝরে গেল মেয়েটি, স্পিক আপ, অঙ্কনের মৃত্যুর জন্য দায়ী কে?— এসব লেখা ছিল।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অঙ্কনের মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। এই মৃত্যুর পেছনে অনেক রহস্য উন্মোচন হোক, এতটুকুই চাওয়া সবার। অঙ্কনকে বাঁচাতে সবাই যেভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন, আশা রাখি সবাই এই মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনে এক হয়ে আওয়াজ তুলবেন।

দোষী যে বা যারাই হোক অবশ্যই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অঙ্কন অবশ্যই ইংরেজি বিভাগ তথা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ছিলেন। অঙ্কনের চিকিৎসায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভাগের শিক্ষকদের পাশে পেয়েছি। আশা রাখি এই লড়াইয়েও সবাইকে পাশে পাব।

ফেসবুকে #ankan_needs_justice, #fight_for_ankan-সহ বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে অঙ্কনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দাবি জানাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ থেকেই আমি অঙ্কন দিদির সঙ্গে মিশেছি। তার কাছ থেকে বিতর্ক শিখেছি, একসঙ্গে বিতর্ক করেছি। তার মতো স্পষ্টভাষী, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, আত্মবিশ্বাসী ও মেধাবী শিক্ষার্থী কোনোভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না, আমি বলছি তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী পিয়াল দাস অনুপ বলেন, ‘অঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। ডিপার্টমেন্টের ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর রহস্য এখনও উদঘাটন হয়নি। এই ঘটনাও যাতে আগের মতো ধামাচাপা পড়ে না যায় সে জন্য সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।’

জবির ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাজু বলেন, ‘অঙ্কনের চিকিৎসায় আর্থিক সহযোগিতার জন্য আমরা যেভাবে সবাই এগিয়ে এসেছিলাম, তেমনিভাবে এই মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনেও আমরা সবাই এগিয়ে আসব, এই প্রত্যাশা।’

নাট্যকলা বিভাগের ১২তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সুমাইয়া সোমা বলেন, ‘অকালে একটি ফুল ঝরে পড়ল, আমরা তা মেনে নিতে পারছি না। তার এ রহস্যজনক মৃত্যু ধামাচাপা না পড়ুক। তদন্ত করে বের করা হোক, কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

‘সে হিন্দু থেকে মুসলিম হয়েছে এসব নিয়ে কথা না বলে জগন্নাথের শিক্ষার্থী হিসেবে তার মৃত্যুর কারণ বের করে আনতে সবার এগিয়ে আসা উচিত। এ নিয়ে এখনও কোনো মামলা হয়নি, তার পরিবারও চুপ করে রয়েছে। তার রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া দরকার। তা না হলে প্রতিদিন এ রকম অনেক অঙ্কন বিশ্বাসের মৃত্যু বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে ধামাচাপা পড়ে থাকবে। সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতে তার পরিবারেরও সহযোগিতা করা উচিত। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে এই মৃত্যু রহস্য তদন্তের দাবি জানাই।’

গত ২৪ এপ্রিল স্বামীর বাসায় জ্ঞান হারান অঙ্কন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ৮ মে মৃত্যুবরণ করেন অঙ্কন।

মৃত্যুর পর জানা যায়, ধর্মান্তরিত করে এই শিক্ষার্থীকে বিয়ে করেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ।

অঙ্কনের বন্ধুদের ভাষ্য, শাকিলের সঙ্গে বিভিন্ন সময় মনোমালিন্য ও বিয়ের বিষয়ে হতাশায় ভুগতেন অঙ্কন।

এ বিভাগের আরো খবর