গত বছর ২৮ নভেম্বর বান্দরবানের আলীকদমে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ১২৭ জনের নামে মামলা হয়েছে।
এক নম্বর আলীকদম ইউনিয়নের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আনোয়ার জিহাদ বুধবার নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।
বৃহস্পতিবার সকালে বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. খলিল নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ১ নম্বর আলীকদম সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, উপজেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং অফিসার আতিকুল ইসলাম চৌধুরী, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রিসাইডিং অফিসার মো. জসীম উদ্দীন, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ওবাইদুল হাকিম, আশিকুল ইসলাম, পোলিং অফিসার হুমাইরা জান্নাত লিমা, সামহ্রী মারমা ও পোলিং অফিসার মো. আবুজাফর।
এ ছাড়া ৮ নম্বর ওয়ার্ডের প্রিসাইডিং অফিসার হুমায়ুন কবির, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার আক্তার উদ্দিন; ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রিসাইডিং অফিসার রামেল পাল, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ হোছনগীর।
আরও রয়েছেন ৫ নম্বর ওয়ার্ড প্রিসাইডিং অফিসার গিয়াস উদ্দীন, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার চানু মারমাসহ আলীকদমের ১ নম্বর সদর ইউনিয়নের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে নির্বাচনের সময় দায়িত্বরত প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার।
এজাহারে বলা হয়, গত ২৮ নভেম্বর আলীকদমের চার ইউনিয়নে ভোট হয়। বাদী ১ নম্বর আলীকদম সদর ইউপিতে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে অংশ নেন।
নির্ধারিত সময়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হলেও গণনার সময় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রচুর কারচুপির অভিযোগ ওঠে। নির্বাচনি এলাকার দুর্গম ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আসামিরা ভোট কারচুপি করেন।
এ সময় তারা বাদীর এজেন্টদের কাছ থেকে ফরমে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে কেন্দ্রে রেজাল্টশিট সরবরাহ না করে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৮৯.৮৮ শতাংশ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৯৯.১৯ শতাংশ ভোট কাস্টিং দেখায়।
এসব অনিয়মের প্রমাণসহ বিভিন্ন দপ্তরে পুনরায় ভোট গণনা ও দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। তাই নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন।
বাদী মো. আনোয়ার জিহাদ বলেন, ‘নির্বাচনে ভোট কারচুপির প্রমাণসহ কমিশনে অভিযোগ করেছিলাম। নির্বাচন কমিশন অভিযোগ আমলে নিয়ে গেজেট স্থগিত করলেও চারটির মধ্যে ৩ ইউপিতে গেজেট প্রকাশ করে। শুধু আলীকদম সদর ইউপির গেজেট প্রকাশ করা হয়নি।
‘এরপর নিবার্চন কমিশনের পক্ষে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিতও হয়। এরপরও প্রতিবেদন কেন আমার পক্ষে আসেনি তা পরিষ্কার না।’
তিনি বলেন, ‘পরে অদৃশ্য কারণে চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিনের নামে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তাই ন্যায়বিচারের প্রত্যাশায় নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে বুধবার মামলা করি।’
এ ঘটনায় বান্দরবান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী গেজেট প্রকাশ হওয়ার পর ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পারেন। যাদের নামে মামলা হয়েছে তারা আইনিভাবে এর মোকাবিলা করবেন।’