পঞ্চগড়ে ভরা মৌসুমে সমতলের ক্ষুদ্র চা চাষিরা সারের সংকটে পড়েছেন। হাটবাজারগুলোতে প্রয়োজনীয় সার পাচ্ছেন না তারা। পটাশ সারের অভাবে সাধারণ কৃষকরাও একই সংকটে পড়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ার কারণে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
পঞ্চগড়ে চায়ের মৌসুমে চা চাষিরা বাগানে বিভিন্ন সার দিয়ে থাকেন। পাট, বাদাম, তিল, ভুট্টাসহ নানা অর্থকরী ফসলেও সার দিচ্ছেন সাধারণ চাষিরা।
এ ছাড়া জৈষ্ঠ-আষাঢ় মাস আমন ধান রোপনের সময়। তাই আমন ধানের বীজতলা উৎপাদনের জন্যও সারের প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় সারের বরাদ্দ কম থাকার সুযোগ নিচ্ছেন সার ব্যবসায়ীরা। বেশি দামে সার বিক্রি করায় চাষিদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।
চাষিরা বলছে, সঠিক সময়ে সার দিতে না পারলে চায়ের উৎপাদন কমে যাবে।
তেঁতুলিয়া উপজেলার তেলিপাড়া গ্রামের ক্ষুদ্র চা চাষি হাবিবুর রহমান জানান, বাজারের বহু দোকান ঘুরে সার পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে পটাশ সার পাওয়া যাচ্ছে না। এ সময় চা বাগানে সার দিতে না পারলে পাতা হবেনা। এতে চা চাষিরা লোকসানে পড়বে।
এদিকে জেলায় এবার পাটের আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমিতে।
বিসিআইসি ও বিএডিসির নির্ধারিত সার ডিলাররা বলছে, পঞ্চগড়ে কৃষি আবাদ বেড়ে গেছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে চায়ের আবাদ। ফলে সারের চাহিদা বাড়ছে। সেই তুলনায় এই জেলায় সারের বরাদ্দ কম।
তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর এলাকার সার ডিলার রফিকুল ইসলাম জানান, চা বাগান এবং কৃষি আবাদে যে পরিমাণ সারের প্রয়োজন আমরা তা পাচ্ছি না। ফলে কৃষক সার পাচ্ছেন না। এই জেলায় আরও সারের বরাদ্দ প্রয়োজন ।
বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, পঞ্চগড় জেলায় নিবন্ধিত ছোট চা বাগান রয়েছে এক হাজার ১৬৮টি। অনিবন্ধিত চা বাগান রয়েছে ৬ হাজার, ৭ হাজার ২৮৩ একর জমিতে এই চায়ের আবাদ করা হয়েছে।
জেলায় শুধুমাত্র চা চাষের জন্য বছরে চার হাজার টন সারের প্রয়োজন রয়েছে। এই চা বাগানের বিপরীতে বিসিআইসি ইউরিয়া তিনশ টন এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশান (বিএডিসি) এবং বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিস করপোরেশন (বিসিআইসি) টিএসপি একশ টন ও ডিএপি দুইশ টন মোট ৬০০ টন সার বরাদ্দ দিয়েছে। তাই চা চাষিরা প্রয়োজনীয় সার পাচ্ছেন না।
বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শামীম আল মামুন বলেন, ‘আমাদের গবেষণা মতে এই জেলায় চা চাষের জন্য বছরে চার হাজার টন সারের প্রয়োজন রয়েছে। ক্ষুদ্র চা চাষিরা বেশি সার ব্যবহার করেন। সেই তুলনায় আরও বেশি সারের প্রয়োজন।’