পরিবারের অনুমতি পেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে আরও কিছুদিন হাসপাতালে রাখতে চান চিকিৎসকরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিনি সব মামলাতে আপাতত জামিনে রয়েছেন। শরীরের অবস্থা এখন আমরা তার পরিবারের কাছে জানাব। পরিবার চাইলে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত তাকে অবজারভেশনে রাখা হবে।’
পরিচালক বলেন, ‘তার (সম্রাট) চিকিৎসায় আমরা একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করব। তার শারীরিক অবস্থা পরিবারের কাছে ব্যাখ্যা করব। তার অভিভাবকরা না নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত তিনি এখানেই থাকবেন।
‘এর মধ্যে কোনো অসুবিধা দেখা দিলে তাকে হয়তো আবারও লম্বা সময়ের জন্য এখানে থাকতে হতে পারে।’
সম্রাটের শরীরের অবস্থা জানতে চাইলে চিকিৎসকরা বলেন, ‘আপাতত আমরা বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছি। তাকে দেখে বোঝা যাবে না, তিনি কতটা অসুস্থ।
‘সবাই তাকে স্বাভাবিক এবং নরমাল মানুষ হিসেবে দেখবেন, তবে কার্ডিওলজির চোখ দিয়ে যদি দেখা হয়, তাহলে তার শরীরের অবস্থার যেকোনো সময় অবনতি হতে পারে।’
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দেড় বছর ধরে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। সম্রাটের হার্টের ৩১ থেকে ৩৩ শতাংশ ফাংশনাল ছিল। তিনি আসামি হলেও আমাদের কাছে একজন রোগী। সেই হিসেবেই আমরা দেখেছি তাকে।
‘ওনার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক নয়। এমনকি বিছানা থেকে টয়লেটে যেতেও কষ্ট হয়। আমরা শঙ্কায় ছিলাম যে আমাদের কোনো অবহেলার কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে কি না।’
কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রায়হান মাসুম মণ্ডল বলেন, ‘সম্রাটের হার্টের এমন কিছু ক্রিটিক্যাল অবস্থা আছে। যেকোনো সময়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়া আছে ভাল্বের সমস্যা।
‘দূর থেকে অনেকটা সুস্থ মনে হলেও চিকিৎসক হিসেবে দেখলে বোঝা যায়, ওনার দেহে যেন একটা বোমা বাঁধা রয়েছে। রাতের বেলায় হার্টের ঝুঁকির মাত্রা আরও বেড়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘ওনাকে কারাগারে নিতে বিভিন্ন সময়ে জেল কর্তৃপক্ষ কাগজ পাঠিয়েছে। আমরা কখনও বলিনি যে নিতে পারবে না। আমরা কেবল রোগীর অবস্থা জানিয়েছি। বর্তমানে সম্রাটের হার্ট স্বাভাবিক রয়েছে, তবে কিছু জটিলতা এখনও আছে।
‘আমরা পুরো এক মাসের একটা রিপোর্ট তৈরি করব। আমাদের সব ধরনের চিকিৎসার সক্ষমতা আছে। পরিবার চাইলে বাইরেও নিতে পারবে। মেটালিক ভাল্ব কী অবস্থায় আছে, সেটি দেখতে হবে।’
ইলেকট্রিক ভাল্বের যে আধুনিক প্রযুক্তি দরকার, সেটি বিএসএমএমইউতে নেই বলে জানান কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক।
তিনি বলেন, ‘এই প্রযুক্তিতে আমাদের এখনও দুর্বলতা রয়েছে। এতটা সক্ষম নই। আরও এক সপ্তাহ ওনার হাসপাতালে থাকতে হতে পারে। ওনার (সম্রাটের) ভালো চিকিৎসা দরকার।
‘যেহেতু এখনও আইনি বাধা উঠে গেছে, তাই চাইলে স্বজনরা বাইরে চিকিৎসা করাতে নিতে পারেন। আগামী সোমবার আরও একটি বোর্ড সভা বসবে। সেখানেই আমাদের সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’