মাত্র আড়াই শ মিটার সড়ক সংস্কার না করায় রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ১৫ গ্রামের মানুষকে ঘুরতে হয় ১০ কিলোমিটার পথ।
বহরপুর ইউনিয়নের বহরপুর বাজার-মৃধার বটতলার সড়কের বাহিরচর এলাকায় শুষ্ক মৌসুমে হাঁটা গেলেও বর্ষাকালে তা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তাই ১২ বছর ধরে সড়কটি সংস্কারের অপেক্ষায় রয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
তবে সড়ক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সড়ক থেকে বালু তোলার কারণেই এটি ভেঙে গেছে। পরে আর সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, বহরপুর বাজার থেকে ইসলামপুর ইউনিয়নের মৃধার বটতলা পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় তিন কিলোমিটার। বহরপুর ও ইসলামপুর ইউনিয়নের শেকারা, খালকুলা, নতুন নগর, আড়াবাড়িয়া, রামদিয়া, বাওনারা, বাহিরচর, পুরান খালকুলা, বারমল্লিকা, রাজধরপুরসহ অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের প্রধান পথ ছিল এটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বহরপুর থেকে বাহিরচর পর্যন্ত সড়ক পাকা। সড়কের শেষে বেশ কিছু অংশ কাঁচা। পরের অংশে সড়কটি ভেঙে নেমে গেছে গর্তে। এ অবস্থা প্রায় ২৫০ মিটারের। এ রাস্তা মাড়িয়েই মানুষকে হেঁটে যেতে হয় পাশের নীলকুঠি গ্রামে।
অন্য কোনো যানবাহন এ অংশ দিয়ে পারাপার সম্ভব নয়। কারণ ভাঙা অংশের এক পাশে বড় পুকুর, অন্য পাশে ফসলি জমি।
এই পথ দিয়েই কৃষক, ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ যাতায়াত করত। কিন্তু সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় এখন তাদের ১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে গন্তব্যে যেতে হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। তাই দ্রুত সংস্কারের দাবি তাদের।
বহরপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার শুকুর খান জানান, বহরপুর থেকে মৃধার বটতলার এ সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্তত ১৫ গ্রামের মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় যানবাহনও চলাচল করতে পারে না।
১৫ বছর আগে সড়কের পাশের জমিতে পানি জমে। এরপর থেকেই ভাঙন শুরু হয়। ১২ বছর আগে এটি পুরোপুরি ভেঙে যায়। এরপর আর সংস্কার করা হয়নি। সড়কটি সংস্কারের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শুকুর খান বলেন, ‘এ অবস্থায় সড়কের দুই পাশে মাটি ভরাট করে একটি কালভার্ট করে দিলে মানুষ সহজেই যাতায়াত করতে পারে।’ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খান জানান, বালু উত্তোলনের কারণেই রাস্তাটি ভেঙে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বালু তোলা বন্ধের নির্দেশ দেন। তবে ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।
বহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, সড়কের পাশের জমি থেকে যারা বালু উত্তোলনকারীরা ভেঙে যাওয়া অংশ ভরাট করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু পরে আর দেয়নি। তাই সড়কটি ওভাবেই রয়ে গেছে। এখন যে অবস্থা তাতে পাইলিং করতে হবে। ৪০০ থেকে ৫০০ ট্রাক মাটি ফেলতে হবে। এটি অনেক টাকার ব্যাপার।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী বাদশা আলমগীর বলেন, ‘এ ধরনের সড়ক সাধারণত স্থানীয় এমপি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের যৌথ পরামর্শে হয়ে থাকে। সড়কটির জন্য ডিপিপি দেয়া হয়েছে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।’বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বালু তোলায় ওই সড়কে এখন আর ব্রিজ করার মতো অবস্থা নেই। সড়কটি সংস্কারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।’