টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দেয়া হলে পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করে।
কালিহাতী উপজেলার নাগবাড়ী ইউনিয়নের মরিচা পাইকপাড়া গ্রামে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে।
অভিযুক্ত ৪৮ বছরের মোশারফ মিয়া উপজেলার নাগবাড়ী ইউনিয়ন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। ২৬ বছরের অভিযোগকারী নারী সম্পর্কে মোশারফের ভাগনি এবং তার ভাতিজার স্ত্রী।
অভিযোগকারীর দাবি, ‘শারীরিক সম্পর্কের’ প্রস্তাব দেয়ায় মোশারফের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। এর জেরে মোশারফ তাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোশারফ। তার দাবি, পরের বুদ্ধিতে বাড়ির জায়গা দখল করতেই তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তোলা হয়েছে।
গৃহবধূ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্য মোশারফ আমাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব (শারীরিক সম্পর্ক) দিয়ে আসছিলেন। রমজান মাসে একদিন রাতে রান্না করার সময় সে তার বন্ধুদের নিয়ে আমার মুখ চেপে ধরে কুপ্রস্তাব দেন। এ সময় ডাক-চিৎকার করলে তারা পালিয়ে যান।
‘এ ঘটনায় ১৯ এপ্রিল মোশারফের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করি। মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে মোশারফ আজ এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।’
ইউপি সদস্য মোশারফ মিয়া বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি জড়িত নই। আমি ঘটনার সময় সেখানে ছিলামও না। আর সে আমার আপন ভাগনি লাগে, তাকে কুপ্রস্তাব দেয়ার প্রশ্নই আসে না।’
তার ভাষ্য, তার জায়গায় তার ভাতিজা প্রবাসী আলহাজ মিয়াকে থাকতে দেয়া হয়েছে। দু-একজনের বুদ্ধিতে সেই জায়গা দখল করার জন্য তাকে অপবাদ দেয়া হচ্ছে।
এদিকে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে মোশারফের পরিবারের দাবি, ওই গৃহবধূকে মারধর বা নির্যাতন করা হয়নি। তাদের জায়গায় একটি কাঁঠালগাছ রয়েছে। ওই গাছ থেকে কাঁঠাল পাড়তে গেলে অভিযোগকারী গৃহবধূ তাদের বাধা দেন। তখন কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে গৃহবধূ বলেন, গাছ থেকে কাঁঠাল পাড়তে হলে তাকে বেঁধে পাড়তে হবে। এ কথা বললে তারা তাকে গাছে বেঁধে রাখেন।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করতে গেলেও তিনি নিজেই দড়ির বাঁধন খুলতে দেননি। বলেন, পুলিশ এসে দেখুক তাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পরে স্থানীয় এক সাংবাদিক জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ এসে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে।
কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’