লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে শহীদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় হওয়া মামলায় ৩৮ আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
জ্যেষ্ঠ বিচারিক আমলি আদালত-৩-এর বিচারক জয়নাল আবেদীন তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে তারা আদালতে আত্মসমর্পণ এবং জামিন আবেদন করেন।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. মুসা।
তিনি বলেন, জুয়েল হত্যা মামলায় ৩৮ আসামি আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাদের জামিন আবেদন করেন আইনজীবীরা। তবে শুনানি শেষে তা নাকচ করেন বিচারক।আসামিদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন কে এম হুমাউন রেজা স্বপন, ফিরোজ হায়দার লাভলু ও আফরোজা বানু।
আইনজীবী ফিরোজ হায়দার লাভলু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এজাহারভুক্ত আসামি মো. রুমেল মিয়া ও পুলিশের তদন্তে উঠে আসে ৩৭ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তাদের মধ্যে ১৪ জনের পক্ষে আমি জামিন শুনানিতে অংশ নিই। আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। জামিন পেতে জেলা জজ আদালতে আমরা আপিল করব।’
জুয়েল হত্যার ঘটনায় তিনটি মামলা হয়। এসব মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ১১৪ জন। তাদের মধ্যে ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে বর্তমানে ৯ জন কারাগারে আছেন। বাকিরা জামিনে মুক্ত হয়েছেন।
পুলিশ পরিদর্শক মো. মুসা নিউজবাংলাকে বলেন, তিনটি মামলারই চার্জশিট জমা পড়েছে ২০২১ সালে। পরের বছর এপ্রিলে ওই চার্জশিটগুলো গ্রহণ করে আদালত এবং তদন্তে প্রাপ্ত ৩৭ জনের নাম আসামির তালিকায় যুক্ত হয়েছে।
২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর বিকেলে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তর্কাতর্কির পর ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ৫০ বছর বয়সী শহীদুন্নবী জুয়েলকে। পরে তার দেহে পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
ঘটনার সময় শহীদুন্নবী জুয়েলের সঙ্গী ৫১ বছর বয়সী সুলতান জোবায়ের আব্বাসও আহত হন। একপর্যায়ে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়।
এ ঘটনায় শহীদুন্নবীর ভাই সাইফুল আলম ৪৩ জনের নাম উল্লেখ ও কয়েক শ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পাটগ্রাম পুলিশের এসআই শাহজাহান বাদী হয়ে আরও একটি মামলা করেন ৪৯ জনের নাম ও অজ্ঞাত কয়েক শতের বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করেন তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মো. শাহ নেওয়াজ নিশাত। এ মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় শত শত ব্যক্তিকে।
শহীদুন্নবী জুয়েলের বাড়ি রংপুরের শালবন এলাকায়। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের লাইব্রেরিয়ান ছিলেন।